বাংলাদেশের ছয় ঋতুর বৈশিষ্ট্য এবং গ্রীষ্ম ঋতুর বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশের ছয় ঋতুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে যদি আপনি একজন বাঙালি হয়েও না জানেন
তাহলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কেননা আমরা আর্টিকেলে আমাদের দেশের ছয় ঋতুর
বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।
বাংলাদেশ একটি ঋতু প্রধান দেশ। আমাদের দেশের আবহাওয়া বা জলবায়ু নির্ভর করে
ছয়টি ঋতুতে ভাগ করা হয়েছে। তাছাড়াও আপনি এখানে জানতে চলেছেন গ্রীষ্ম ঋতুর
বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। তাহলে আসুন এ সকল বিষয় সম্পূর্নভাবে জেনে নেন যাতে করে
আপনিও সব ঋতুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে পারেন।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ বাংলাদেশের ছয় ঋতুর বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশের ছয় ঋতুর বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশের ছয় ঋতুর বৈশিষ্ট্য এক এক ধরনের। বাংলাদেশ একটি ষড় ঋতুর দেশ।
অর্থাৎ আমাদের দেশে মোট ছয়টি ঋতু রয়েছে যেগুলি হল গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ,
হেমন্ত, শীত এবং বসন্তকাল। এই ছয়টি ঋতু রয়েছে একেক ধরনের বৈশিষ্ট্য এবং
বৈচিত্র। বাংলাদেশের ঋতু পরিবর্তনের কারণ হলো বাংলাদেশের জলবায়ু এবং
বৈচিত্র্যতা। আপনি হয়তো সকল ঋতুর নাম সম্পর্কে জানেন কিন্তু আপনি কে বৈশিষ্ট্য
সম্পর্কে জানেন। না থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেল থেকে নিন।
আরো পড়ুন ঃ বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী ২০২৪
বাংলাদেশের ঋতু পরিবর্তন অত্যন্ত সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ঋতু একেক
সময় একেক রকম বৈচিত্র নিয়ে হাজির হয় তাদের নির্দিষ্ট সময়ে। আমাদের দেশের
সকল ঋতু একেক রকম বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেমন গ্রীষ্মের প্রচন্ড রোদ এবং তার সাথে
রয়েছে প্রচন্ড রকমের খরা। এই সকল খরা যে আমাদের ক্ষতি করে তা কিন্তু নয়।
কারণ এই রোদের দ্বারাই বোরো মৌসুমে ধান কে পাকতে সহায়তা করে।
- বাংলাদেশের ঋতুর মধ্যে প্রথম হচ্ছে গ্রীষ্মকাল। এই গ্রীষ্মকালে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে বোরো ধান উঠে আসে। ঐতিহ্য হিসেবে গ্রাম বাংলায় হালখাতা নামক উৎসবের শুরু হয়। সেই সাথে চারিদিকে প্রচুর খরা দেখা যায়। সেই খরার কারণে খাল বিল সব শুকিয়ে ফেটে যায়।
-
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ঋতু হচ্ছে বর্ষাকাল। বর্ষাকালে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টি
দেখা যায়। সেই বৃষ্টির কারণে আমাদের দেশের খাল-বিল এবং নদী-নালা সবকিছু
পানিতে ভরে যায়। তবে এ সময় অতিরিক্ত বন্যাও দেখা যায়।
-
বাংলাদেশের ঋতুর মধ্যে তৃতীয়তম ঋতু হচ্ছে শরৎকাল। এ শরৎকাল হলো সকল ঋতুর
রানি। কেন রানী বলা হয় এ বিষয়ে আমরা একটু পরে জানব। শরৎকালে বাংলাদেশের
অনেক ফুল ফুটতে দেখা যায় এবং অনেক সুন্দর একটি ঋতু হয়ে থাকে।
-
হেমন্ত কাল হলো বাংলাদেশের চতুর্থতম ঋতু। হেমন্তকালে গ্রাম বাংলার মানুষের
ঘরে ঘরে আমন আউশ ধান উঠে আসে। এই সময় শীতের কুয়াশা দেখা যায়। এই ঋতুটি হল
একটি নাতিশীতোষ্ণ ঋতু।
-
শীতকাল বাংলাদেশের পঞ্চম এবং শ্রেষ্ঠ একটি ঋতু। শীতকালে প্রচুর ঠান্ডা
অনুভব হয়। তাছাড়া চারিদিকে কুয়াশা তে ঢেকে যায়। এই সময় আমাদের
বাঙ্গালীদের ঘরে ঘরে পিঠা উৎসবে ভরে যায়। তাছাড়াও বিভিন্ন রকমের রস যেমন
খেজুরের রস পাওয়া যায়। এই ঋতু সম্পর্কে আমরা নিম্নে বিস্তারিত জানবো।
- বাংলাদেশের সর্বশেষ ঋতুটি হল হলো বসন্তকাল। এই বসন্তকালে গাছে নতুন পাতা এবং ফুল গজাতে শুরু হয়। চারিদিকে ফুলের গন্ধে ছেয়ে যায়। সেইসাথে রয়েছে কোকিলের মিষ্টি কন্ঠের গান।
গ্রীষ্ম ঋতুর বৈশিষ্ট্য
গ্রীষ্ম ঋতুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা একজন বাঙালি হিসেবে আমাদের জন্য
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রীষ্মকাল বাংলাদেশের প্রথম ঋতু। এই ঋতুতেই
আমাদের দেশের বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়। কেননা গ্রীষ্মকাল বাংলা মাসের দুইটি
মাস নিয়ে গঠিত হয়। একটি হচ্ছে বৈশাখ মাস এবং অপরটি হচ্ছে জ্যৈষ্ঠ মাস।
গ্রীষ্মকাল বসন্তকালের পরবর্তী ঋতু। এ ঋতু অনেক উপকারী এবং অপকারী বৈশিষ্ট্য
রয়েছে যেগুলো যদি আপনি জেনে না থাকে তাহলে এই আর্টিকেল থেকে জানুন।
গ্রীষ্মকাল বাংলা ঋতুর মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণতম মাস। এই মাসের উষ্ণতা এতই থাকে
যে এর উষ্ণতার ফলে গ্রাম বাংলার খাল বিল এবং নদী-নালা সবকিছু শুকিয়ে যায়।
মানুষ গরমে অতিষ্ঠ হয়ে যায় এবং সেই সাথে প্রচুর গরম ও ধুলাবালির কারণে অনেক
রোগ বালাই দেখা যায়। আবার সে সাথে অতিরিক্ত গরমের কারণে মানুষের মাঝে পানি
শূন্যতাও দেখা যায়। তবে এত গরমের মাঝে বা হালকা অপকারিতার মাঝেও কিন্তু
গ্রীষ্মকালের উপকারিতা অনেক।
আরো পড়ুন ঃ বাংলাদেশের ধনী জেলার তালিকা ২০২৪
গ্রীষ্মকালের এই অতিষ্ঠ গরমের কারণে কিন্তু বোরো মৌসুমীর ধান পাকে । তাছাড়াও
এই গরমের কারণে গ্রীষ্মকালের অনেক ফলমূল কে পাকতে সাহায্য করে যেমন আম এবং
কাঁঠাল আবার তার সাথে রয়েছে আতা ফল। গ্রীষ্মকালে আমাদের দেশে নববর্ষ পালিত
হয়। এই গ্রীষ্মকালে আবার গ্রাম বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে বোরো মৌসুমের
ধান উঠে আসে। তাছাড়াও প্রচুর ফলমূল এবং শাকসবজি দেখা যায়।
সেই সকল ফলগুলোর মধ্যে হল আম, জাম, কাঁঠাল এবং আতা ফল ইত্যাদি সহ আরো অনেক
ফলমূল দেখা যায় এই গ্রীষ্মকালে। গ্রীষ্মকালে শাকসবজির মেলা বসে যায় বলা
যায় একরকম। কেননা এই সময় অনেক ধরনের শাকসবজি দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম
হলো বেগুন, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া, শশা, কাঁকরোল, করলা,ধুন্দুল, পুঁইশাক, লাল
শাক এবং সজনে ডাটা ইত্যাদি আরো অনেক শাকসবজি রয়েছে যা গ্রীষ্মকালে পাওয়া
যায়।
গ্রীষ্মকালে যে শুধু ফলমূল এবং শাকসবজি পাওয়া যায় তা কিন্তু নয়। এ সময়
হরেক রকমের ফুল দেখা যায়। সেই ফুলগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জুঁই, রজনীগন্ধা
টগর, গন্ধরাজ, মেহগনি, করঞ্জা এবং কনকচূড়া ইত্যাদি আরো অনেক ফুল পাওয়া যায়
এই গ্রীষ্মকালে। গ্রীষ্মকালে সবচেয়ে বড় যে উৎসবটি বাঙালির মাঝে লেগে থাকে
সেটি হল হালখাতা। এই হালখাতা অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ জন্য ঐতিহ্যের একটি উৎসব।
প্রতিবছর গ্রীষ্মকালে এই উৎসব পালন করা হতো। তবে এখন বছরের প্রত্যেকটা
সময়ই হালখাতা দেখা যায়।
তবে এত ভাল দিকের মধ্যেও সকালে আরেকটি ক্ষতির দিক হলো সেটি হল কালবৈশাখী ঝড়।
পুরো গ্রীষ্মকাল জুড়ে এই কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই ঝড়ের ফলে
মাঠের ফসল এবং গ্রামের অনেক বাড়িঘর উড়ে যেতে দেখা যায়। তবে এই মাসে
কালবৈশাখে ছাড়াও অন্যান্য সকল ছোট বড় হয়ে থাকে। আবার সেসব ছোট বড় ঝরে
গ্রামে আম কুড়াতে যাওয়ার মজাটাই অনেক। সারাদিন গরম শেষে যদি একটু বৃষ্টির
ছোঁয়া পাওয়া যায় তাহলে তো আরো বেশি আনন্দ উপভোগ হয়।
বর্ষা ঋতুর বৈশিষ্ট্য
বর্ষাকাল বা বর্ষা ঋতু আমাদের বাংলাদেশের বর্ষপঞ্জির দ্বিতীয় তম ঋতু।
বর্ষাকালে গ্রীষ্মের মতই কিছুটা উষ্ণতা দেখা যায়। তবে বর্ষাকাল নাম শুনেই
হয়তো আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে এই সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এই বৃষ্টিপাত
হওয়ার কারণে বর্ষাকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যার দেখা পাওয়া
যায়। তবে বর্ষাকাল অত্যন্ত সুন্দর একটি ঋতু। বর্ষাকালে বিভিন্ন রকমের ফুল
ফল দেখা যায়। আপনি যদি এসব না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে
জানুন।
বর্ষাকাল যেহেতু গ্রীষ্মকালের পরেই আসে তাই এই সময়েও গ্রীষ্মকালের মতই
কিছুটা উষ্ণতা দেখা যায়। তবে বৃষ্টির সময় এই উষ্ণতা দূর হয়ে যায়।
বর্ষাকালে যে শুধু বৃষ্টি হয় তা কিন্তু নয় এ সময় নিম্নচাপ এবং হালকা
ঝড়েরও প্রভাব দেখা দেয়। শুধু যে বৃষ্টি আর ঝড় হয় তা কিন্তু নয় এ সময়
অনেক ধরনের ফুল দেখা যায় যেগুলো হল কদম ফুল, বেলি ফুল,বকুল ফুল, কেয়া ফুল,
কামিনী ফুল, চাপা এবং শাপলা ফুল ইত্যাদি।
বর্ষাকালে যে শুধু ফুল পাওয়া যায় তা কিন্তু নয় এ সময় বিভিন্ন রকমের
ফলমূল এবং শাকসবজিও পাওয়া যায়। আসলেই বর্ষাকাল বাঙ্গালীদের জন্য অত্যন্ত
সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশের হয়ে থাকে। তবে বর্ষাকাল আসলে আমাদের দেশে দক্ষিণ
এবং পূর্বাঞ্চল একটু দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেননা এই বর্ষাকালে
দক্ষিণ এবং পূর্বাঞ্চলে বন্যার প্রভাব দেখা দেয়। তাই বলা যায় বর্ষাকাল আমাদের
কাছে শান্তির এবং কিছুটা দুশ্চিন্তা নিয়েই আসে আমাদের কাছে।
শরৎ ঋতুর বৈশিষ্ট্য
শরৎকাল বাংলাদেশের তৃতীয় তম ঋতু। আর এই শরৎকালকে বলা হয় বাংলার ঋতুর রানী।
সাধারণত শরৎকাল বাংলা বর্ষপঞ্জিকার দুইটি মাস নিয়ে গঠিত হয় যেটি হল ভাদ্র
এবং আশ্বিন মাস নিয়ে। শরৎকাল এমন একটি ঋতু ঋতুতে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ঋতুর
ছোঁয়া দেখা যায়। শরৎকালকে কেন সকল ঋতুর রানী বলা হয় আপনি যদি না জেনে থাকেন
তাহলে শরৎকালের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানলে তা বুঝতে পারবেন।
আরো পড়ুন ঃ অগ্রহায়ণ মাসের ক্যালেন্ডার 2024
শরৎকাল অত্যন্ত সুন্দর মনোরম পরিবেশের একটি ঋতু। আপনি যে কোন ঋতুর কথাই ভাবেন
না কেন প্রত্যেক ঋতুর ছোঁয়া রয়েছে এই ঋতুতে। আপনি ঋতুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে
জানলে দেখবেন এই ঋতুতে গ্রীষ্মের মত প্রচন্ড গরম দেখতে পাবেন কিছুটা সময়।
আবার অনেক সময় দেখবেন এই ঋতুতে হালকা ধরনের নিম্নচাপ বা কিছুদিন ধরে বৃষ্টি
হওয়া দেখতে পাওয়া যায়। আবার অনেক সময় দেখবেন এই ঋতুতে হেমন্তের মত উৎসব
সমূহকে।
শরৎকাল মানে আমাদের কাছে ঘনিয়ে আনে বিভিন্ন রকমের উৎসব এবং অনুষ্ঠান। এই
ঋতুতে অনেক ধরনের ছোট বড় উৎসব দেখা যায় তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় যেই উৎসবটি
হল তার নাম শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব। যেটি আমাদের দেশের হিন্দু ভাইদের ধর্মের
সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। তাছাড়াও বাঙালি হিসেবে আমাদের অনেক ছোট বড় উৎসব
এই ঋতুতে পেয়ে থাকি। শুধু উৎসব তাই নয় প্রকৃতিও নতুন রূপে সেজে ওঠে এর
ঋতুতে।
চারিদিকে বিভিন্ন রকমের ফুলে ভরে যায়। শরৎকালের বিখ্যাত কিছু ফুল রয়েছেন
যার মধ্যে হল কাশফুল, শাপলা, পদ্ম, জুঁই, কেয়া, শিউলি এবং জবা ইত্যাদি আরো
অনেক বিখ্যাত ফুল রয়েছে। এই ঋতুতে যে শুধু চারিদিকে ফুলে ভরে যায় তা কিন্তু
নয় ফসলের মাঠ ও নতুন করে সেজে ওঠে। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষকরা
জমিতে ধান চাষ শুরু করেন। সেই সাথে ফসলের মাঠের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে থাকে।
এই শরৎকালে আমাদের নদীর চিত্র থাকে ভরপুর। বিভিন্ন নদীর চিত্র
বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে কোন নদীতে অধিক স্রোত থাকে আবার কোন নদীতে কম স্রোত
থাকে। আবার এই শরৎকালে কৃষকের মাঝে আনন্দের বেশ দেখা যায় কেননা বর্ষার
পানি নেমে যাওয়ার ফলে ফসলের জমিগুলো উন্মুক্ত হতে থাকে এবং সেখানে ফসল ফসল
শুরু করেন। সেই খুশির সাথে আবার যুক্ত হয় হিন্দু ভাইদের শারদীয় দুর্গা
পূজা উৎসব আবার বাঙ্গালীদের বিভিন্ন পিঠাপুলির উৎসব।
হেমন্ত ঋতুর বৈশিষ্ট্য
হেমন্তকাল বাংলাদেশের চতুর্থতম ঋতু। এই হেমন্তকাল বাংলা
বর্ষপঞ্জিকার দুটি মাস মেয়ে গঠিত একটি হল কার্তিক এবং অপরটি হল
অগ্রহায়ণ। হেমন্ত ঋতু অথবা হেমন্তকাল আসলে আমাদের দেশের গ্রামবাংলায়
উৎসবের মোহর পড়ে যায়। হেমন্ত কারণ শরৎকালে পরবর্তী ঋতু। শরৎকালে আমন আউসের
ধান বপন করা হয় সেই ধান হেমন্তকাল এসে কেটে ঘরে উঠানো হয়। সাধারণত হেমন্ত
আমন আউসের ধান কাটা কে কেন্দ্র করেই নবান্ন উৎসব পালিত হয়ে থাকে।
আরো পড়ুন ঃ অগ্রহায়ণ মাসের বিয়ের তারিখ 2024
নবান্ন উৎসব বাঙ্গালীদের কাছে একটি ঐতিহ্য স্বরূপ। বহু প্রাচীন আমল থেকে এই
নবান্ন উৎসব বাংলা বিহার এবং উড়িষ্যায় পালিত হয়ে আসছে। হেমন্তের এমন
আরশের ধানের চাল দিয়ে গ্রামের মা এবং বোনেরা বিভিন্ন রকমের পিঠাপুলি এবং
পায়েস বানাতে ঝুকে পড়ে। হেমন্তের এমন আয়শার ধান দিয়ে হেমন্ত কালে অনেক
বিখ্যাত বিখ্যাত পিঠা বানানো হয় তার মধ্যে জনপ্রিয় হলো ভাপা পিঠা, দুধপুলি
সহ আরো অনেক পিঠা। এসব নবান্নের উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে
বিভিন্ন রকম মেলা হয়ে থাকে।
হেমন্তের আবহাওয়া সম্পর্কে বলতে গেলে এই ঋতুর আবহাওয়া অত্যন্ত মনোভাব
পরিবেশের হয়ে থাকে। কেননা হেমন্তকাল থেকেই একটু একটু করে শীট পড়তে শুরু
করে। হেমন্ত কাল আবহাওয়া থাকে নাতীশিতষ্ণ। হেমন্ত কাল থেকে শীতের কুয়াশা
পড়া শুরু হয়ে যায়। সেইসাথে বিভিন্ন রকমের রস বা ফুল দেখা যায় এই ঋতুতে। এ
ঋতুতে বিভিন্ন রকমের ফুল সাজিয়ে থাকে যার মধ্যে হল গন্ধরাজ, মল্লিকা, শিউলি
এবং কামিনী সহ আরো বিভিন্ন রকমের ফুল।
শীত ঋতুর বৈশিষ্ট্য
শীত অথবা শীতকাল হল আমাদের দেশের পঞ্চম ঋতু। শীতকাল হেমন্তকালে পরবর্তী এবং
বসন্তকালের অগ্রিম একটি ঋতু। শীতকাল বাংলা বর্ষপঞ্জিকার দুইটি মাস নিয়ে গঠিত
যেগুলি হল পৌষ এবং মাঘ। শীতকালে তেমন কিছু বলা বা লেখার প্রয়োজন নাই কেননা
এই শীতকালের সাথে আমরা নিবিড়ভাবে যুক্ত রয়েছি। শীতকাল আমাদের দেশের জন্য
কিছুটা আনন্দদায়ক এবং কিছুটা কষ্টদায়ক হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের শীতকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন
তাপমাত্রা হয়ে থাকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। শীতকাল আমাদের
বাঙ্গালীদের জন্য একটু আনন্দের হয়ে থাকে। কেননা শীতকালে গ্রামে গঞ্জে অথবা
শহরে বিভিন্ন পরিবারে বিভিন্ন রকম পিঠা পুলির আয়োজন করা হয়। তাছাড়াও
শীতকালের কুয়াশামন্ডিত সকাল দেখতে কার না বা ভালো লাগে। শীতের সকালে
গ্রামেগঞ্জে খেজুরের রস পাওয়া যায়। আবার সেই খেজুরের রস দিয়ে বিভিন্ন রকমের
বোন তৈরি করে শহরে বিক্রি করা হয়ে থাকে।
তবে এত আনন্দের মাঝেও শীত আমাদের একটু কষ্টদায়ক হয়ে থাকে। কেননা আমাদের দেশ
উন্নয়নশীল দেশ। এখনো আমাদের দেশের অনেক মানুষ রয়েছে যাদের নির্দিষ্ট ঘর বাড়ি
নেই এবং শীতের কাপড় কেনার মত পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা পয়সা নেই। সেই লোকগুলো
অনেক বেশি কষ্টে থাকে এবং যার ফলে আমাদেরকে কিছুটা কষ্টদায়ক এর মধ্যেই থাকতে
পারে। তা আমরা চাকরিজীবী অথবা ছাত্র রয়েছে তারা জানি যে শীতের সকালে উঠতে কতটা
কষ্ট হয়ে থাকে।
বসন্ত ঋতুর বৈশিষ্ট্য
বসন্ত ঋতু অথবা বসন্তকাল আমাদের বাংলাদেশের সর্বশেষ বা ষষ্ঠতম একটি ঋতু।
বসন্তকাল বাংলা বর্ষপঞ্জিকার দুটি মাস নিয়ে গঠিত হয় একটি ফাল্গুন মাস এবং
অপরটি চৈত্র মাস। বসন্তকাল সম্পর্কে বলতে গেলে বলা যায় যে বসন্তকাল
সবচেয়ে সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশের একটি ঋতু। কেননা শীতকালে যেসব গাছের
পাতা এবং ফুলগুলো ঝরে যায় বসন্তকালে সেসব গাছের পাতা এবং ফুলগুলো নতুন করে
রূপ ধারণ করে।
সেই ফুলগুলোর জন্য চারিদিকে সুন্দর গন্ধের ছোঁয়া বয়ে যায়। বসন্তকালের
প্রথম মাস ফাল্গুন মাসে হালকা কিছুটা ঠান্ডা লাগলেও পরবর্তী মাস যেটি হলো
চৈত্র মাস। চৈত্র মাসের শুরু থেকেই কিছুটা গরম করতে দেখা যায় যদিও অনেক
সময় এ মাসের গরম অনেকটাই বেশি হয়ে থাকে। আবার এই মাসে হালকা কিছু বৃষ্টিও
দেখা যায়।
লেখকের শেষ কথা : বাংলাদেশের ছয় ঋতুর বৈশিষ্ট্য
সম্মানিত পাঠকগণ আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে আলোচনা করেছি বাংলাদেশের ছয় ঋতুর
বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এবং আরো অন্যান্য বিষয় নিয়ে। আমরা জাতি হিসেবে
বাঙালি এবং পরিচয় হিসেবে বাংলাদেশী তাই আমাদের দেশে মোট ছয়টি ঋতু রয়েছে।
যেগুলো আমাদের বাংলা বর্ষপঞ্জিকা ঘিরে রয়েছে। প্রত্যেক দুটি মাস নিয়ে
একটি করে ঋতু গঠিত হয় আমাদের দেশে।
আমাদের দেশে মোট ছয়টি রয়েছে ঋতু তবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আবার দুটি তিনটি
বা চারটি করে রয়েছে। সেই দিক থেকে আমাদের দেশের বৈচিত্র হরেক রকমের।
পাঠকগণ আমরা এই পোস্টে যা যা আলোচনা করলাম যেমন বাংলাদেশের ছয় ঋতুর
বৈশিষ্ট্য এ সকল বিষয় সম্পূর্ণভাবে পড়াশোনা এবং জানাশোনার মাধ্যমে
লেখা হয়েছে। তাছাড়াও আমি নিজেও একজন বাঙালি নিজের অভিজ্ঞতা থেকেও এ সকল
কিছু লেখা হয়েছে।
ট্রাজেডি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url