পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ
পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান ?
তাহলে এই পোস্ট থেকে জেনে নেন। পলাশীর যুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছিল নবাব সিরাজউদ্দৌলা
এবং ব্রিটিশদের মধ্যে।
তাছাড়া এই পোস্টে আরো জানা যাবে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে ছিলেন সম্পর্কে।
ইতিহাস জানা অত্যন্ত জরুরি আমাদের জন্য কেননা ইতিহাস আমাদের বাস্তব জীবনে অনেক
কিছু শিখিয়ে থাকে। আপনি যদি পলাশী সম্পর্কে না জানেন তাহলে জেনে নেন।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ
- পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ
- নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে ছিলেন
- নবাব কেন যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন
- নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু হয়েছিল কিভাবে
- নবাব সিরাজউদ্দৌলার বংশধর
- নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোথায় বন্দী হয়েছিলেন
- নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম স্ত্রীর নাম কি
- পলাশীর যুদ্ধ কত সালে সংঘটিত হয়
- নবাব সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারীর নাম
- লেখক এর শেষ বক্তব্য ঃ পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ
পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ
পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ সম্পর্কে আর্টিকেলটি লেখা
হয়েছে। নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলা বিহার উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন
নবাব। বলতে গেলে তারপরেও নবাব ছিল কিন্তু কেউ স্বাধীন ছিল না সবাই ইংরেজদের
দাসত্ব গ্রহণ করেছিল। তিনি খুব বয়সে মাত্র ২৩ বছর বয়সেই সিংহাসন এবং ক্ষমতা
পান যেটি তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে পলাশের ময়দানে
ইংরেজদের একটি যুদ্ধ হয় আপনি কি সেই যুদ্ধের ফলাফল জানেন। যদি না জেনে থাকেন
এখান থেকে জেনে নিন।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা এই মাত্র ২২ বছর বয়সে নবাব হয়েছিলেন এটি অনেকেই মেনে
নিতে পারছিলেন না। সেই কারণে অনেকেই চাইতো যে নবাব সিরাজউদ্দৌলার যেন পতন
ঘটে। যখন নবাব এবং ইংরেজ সৈন্যদের মধ্যে যুদ্ধ হয় তখন নবাব পরাজয় বরণ করে
এই পরাজয়ের বিভিন্ন কারণ গবেষণা করলে দেখা যায়। সেই কারণগুলি আপনার নিচে
এখন জানবেন। পরাজয় বরণের প্রধান প্রধান কারণ গুলি হল।
ষড়যন্ত্র ঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের প্রথম কারণ হলো তার
বিপক্ষে হওয়া ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন
ঘটেছিল। এখানে ষড়যন্ত্র করেছিলেন নবাবের বিপক্ষে তারই সেনাপতি মীরজাফর,
উমিচাঁদ, জগত শেঠ, রাজা রূপচাঁদ, ইয়ার লতিফ এবং নবাবের আপন খালা
ঘসেটি বেগম। ঘসেটি বেগম মেনে নিতে পারেননি যে তার ছেলে থাকা অবস্থায় তার ছোট
বোনের ছেলে নবাব হবে। তাই তিনি নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন।
এদিকে মীরজাফর নবাব সিরাজউদ্দৌলার নানা মারা যাওয়ার পর থেকে স্বপ্ন দেখতেন
যে নবাবের সিংহাসনে একদিন মীরজাফর বসবেন। এই স্বপ্নটা আশা থেকে মীরজাফর
নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোলেন এবং তাকে পলাশীর যুদ্ধে পরাজয় বরণ
করতে বাধ্য করেন। এছাড়াও উমিচাঁদ টাকার জন্য এবং বাকিরা নিজ নিজ
স্বার্থের কারণে নবাবকে পলাশীর ময়দানে হারতে বাধ্য করে।
নবাবের সরলতা এবং বোকামি ঃ নবাব সিরাজুদ্দৌলা সহজেই যেকোনো
ব্যাক্তিকে বিশ্বাস করতেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলা বুঝতে পেরেছিলেন যে তার
পেছনে তাকে দমানোর জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। এবং তিনি আন্দাজ ও করতে পেরেছিলেন যে
তার বিরুদ্ধে কে কে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। কিন্তু তিনি এতটাই সহজ সরল ছিলেন যে
তাদের শাস্তি দেওয়ার বদলে তাদের কোরআন শরীফ বা নিজ নিজ ধর্ম গ্রন্থ স্পর্শ
করিয়ে শপথ করে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু তিনি ভুলে গেছিলেন যে
বিশ্বাসঘাতকদের কোন ধর্ম নেই। মীরজাফর, জগত শেঠ,উমিচাদ সহ সবাই আবারও
বিশ্বাসঘাতলতা করে। যার ফলে নবাব পলাশীর যুদ্ধে পরাজয় বরণ করেন।
যুদ্ধে সহযোগিতা বা অংশগ্রহণ না করা ঃ নবাবের সেনাপতি
মীরজাফর যুদ্ধে কোন রকম ভাবে অংশগ্রহণ করেননি এবং তার সৈন্যদেরকেও অংশগ্রহণ
করতে দেননি। যেখানে প্রথম পর্যায়ে নবাবের সৈন্যরা যুদ্ধে এগিয়েছিলেন কিন্তু
পরবর্তীতে তাদের পরাজয় বরণ করতে হয়। নবাব সিরাজউদ্দৌলা সৈন্য সংখ্যা ছিল
প্রায় ৬৫ হাজার এবং ইংরেজদের সৈন্য ছিল মাত্র তিন হাজার। কিন্তু নবাবের
সৈন্যরা যারা মীরজাফর এবং জগত শেঠের অধীনে যুদ্ধ করছিল তারা কেউই যুদ্ধে
অংশগ্রহণ করে নাই।
যুদ্ধ সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাওয়া ঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে ফরাসি
থেকে বন্ধুত্ব এবং সাহায্য স্বরূপ অনেক যুদ্ধ সামগ্রী পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু
হঠাৎ করে বৃষ্টি চলে আসায় সেসব যুদ্ধ সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ইংরেজ
সৈন্যদের কাছে এসব যুদ্ধ সামগ্রী ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয় এবং নবাব পলাশীর
ময়দানে পরাজয় লাভ করেন। এখানে নবাবের ব্যর্থতা ছিল নিজেদের অস্ত্র এবং
যুদ্ধ সামগ্রী রক্ষা করতে না পারা।
বিশ্বাসঘাতকতা ও লোভ ঃ সে সময় বাঙালির চরিত্র বলে কোন
জিনিস ছিল না। তাদের ভেতর হিংসা রাগ এবং লোভে ভরপুর ছিল। তারা তাদের নিজেদের
বাংলাকে রক্ষা করার চেয়েও নিজেদের স্বার্থ লাভের জন্য বেশি চেষ্টা ছিল। সেই
কারণে নবাব পলাশীর ময়দানে পরাজয় লাভ করেন এবং বাংলা চলে যায় দখলে। এখানে
বাঙালিদের চরিত্রের চরম অবনতি ঘটে।
নৌ শক্তি এবং রণ নীতি ঃ ইংরেজদের সবচেয়ে বড় শক্তির মধ্যে
আরেকটি ছিল তাদের নৌ শক্তি। যে নবাবের দখলের ছিল না। যেহেতু পলাশীর ময়দান
ভাগীরথী নদীর পাড়ে তাই সেখানে ইংরেজ দল সহযোগী তাদের নৌ শক্তি ব্যবহার করতে
সক্ষম হয়। তাছাড়াও রবার্ট ক্লাইভের যুদ্ধের রণ নীতি বা কৌশল নবাব
সিরাজউদ্দৌলা থেকে অনেকটাই উন্নত এবং ভালো ছিল।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে ছিলেন
নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে ছিলেন এই প্রশ্নটি হয়তো এখন কেউ করেন না। আমরা সকলেই
কম বেশি জানি যে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে ছিলেন। যারা বেশি পড়াশোনা মধ্যে থাকেন
তারা তো আরো ভালো করে জানেন। তবে যারা আপনারা এখনো নবাব সিরাজউদ্দৌলা
সম্পর্কে জানেন না তারা এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন।
ইতিহাস দেখলে নবাব সিরাজউদ্দৌলার দুটি পরিচয় দেখা যায়। একটি হলো তিনি ছিলেন
বাংলা বিহার এবং উড়িষ্যার সর্বশেষ স্বাধীন নবাব। তারপরেও অনেক নবাব ছিল যারা
ইংরেজদের দাসত্ব গ্রহণ করেছিল। নবাব সিরাজউদ্দৌলা মাত্র ২৩ বছর বয়সে তার
নানা মারা যাওয়ার কারণে সিংহাসনে পদার্পণ করেন এবং তিনি নবাবের ক্ষমতা নিজ
হাতে নেন।
দ্বিতীয়ত আরেকটি পরিচয় হলো তিনি ছিলেন নবাব আলীবর্দী খানের ছোট মেয়ে
আমেনার ছোট মেয়ে। এই দুটি পরিচয় পাওয়া যায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা। নবাব
সিরাজউদ্দৌলার ছিলেন বাংলা ইতিহাসের একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি।
যিনি তার জীবনে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। কিন্তু ষড়যন্ত্রের কারণে
সেই সোচ্চার থাকা আর বেশি দিন হয় নাই।
নবাব কেন যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন
নবাব কেন যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন ? আপনি যদি এখনো এই বিষয়টি পড়ে পড়ে
বুঝতে না পারেন তাহলে এই পর্যায়ে বুঝে নিন। নবাব সিরাজউদ্দৌলা ভাগীরথী নদীর
তীরে পলাশীর ময়দানে ইংরেজদের সাথে যুদ্ধরত অবস্থায় পরাজয় বরণ করেন। তিনি
পরাজয় বরণ করলে গোটা ওটা বাংলায় পরাজিত হয়। পলাশীর ময়দানে নবাব
সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।
ইতিহাস বিবেচনা করলে দেখা যায় নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের প্রধান কারণ
হচ্ছে তার বিরুদ্ধে হওয়া ষড়যন্ত্র। কিন্তু অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা মনে করে
থাকেন নবাবের পরাজয়ের কারণ হচ্ছে নবাব নিজেই। কেননা তিনি যখন জানতে পারেন যে
তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে এবং এই ষড়যন্ত্র গুলি কারা কারা করছে এটি জানার
পরেও তিনি কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেন নাই।
বরং এই ষড়যন্ত্রের পিছনে যারা ছিল তাদেরকে কোরআন শরীফ এবং নিজ নিজ
ধর্মগ্রন্থ স্পর্শ করে শপথের মাধ্যমে আবারও যুদ্ধে প্রেরণ করেন। এটি হওয়ার
ছিল সেটি হয়েছে সকল বিশ্বাসঘাতকরা যুদ্ধের ময়দানে বিশ্বাসঘাতকতা করে। তারা
নিজেরা তো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে নাই বরং তাদের অধীনে থাকা সৈন্যদের ও যুদ্ধে
অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয় নাই। এই কারণে বলা যায় এদের ওপর বিশ্বাস করে
যুদ্ধে পাঠানোটাই তার সবচেয়ে বড় ভুল ছিল।
অন্যদিকে প্রকৃতিও নবাবকে সাহায্য করে নাই হঠাৎ করে বৃষ্টি এসে ফরাসিদের
দেওয়া অস্ত্র সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। সেই সাথে রবার্ট
ক্লাইভের যুদ্ধের কৌশলের কাছে নবাব সিরাজউদ্দৌলার কৌশল ছিল অত্যন্ত
ক্ষুদ্র এবং নিম্নমানের। এসব আরো কিছু কিছু কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলা যুদ্ধে
পরাজয় লাভ করেন।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু হয়েছিল কিভাবে
নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু হয়েছিল কিভাবে সেটি আমাদের জানার অনেক আগ্রহ থাকে।
তাছাড়াও এই বিষয়টি জান আমাদের অত্যন্ত জরুরী কেননা বাংলা ইতিহাসে নবাব
সিরাজউদ্দৌলার নাম অনেক বেশি সম্মান এবং গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়। এখন আপনি
যদি নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু সম্পর্কে না জানেন তাহলে এই আর্টিকেল থেকে জেনে
নিন।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর ময়দানে হেরে যাওয়ার পর তিনি তার সহধর্মনী লুৎফুন্নেসা
এবং তাদের চার বছরের সন্তান উম্মে জোহরা। তারা সকলে পালানোর সময় মীরজাফরের
সৈন্যরা তাদেরকে পাকড়াও করে। মূলত একটি বাজারে তাদের আশেপাশের লোকজন চিনে ফেলে
এবং তারা টাকার লোভে মীরজাফরের সৈন্যদেরকে খবর দেয় এবং তারা এসে তাদেরকে পাকড়াও
করে।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা এবং তার পরিবারকে আটক করে মুর্শিদাবাদ কারাগারে রাখা হয়। এবং
সেইখানে হত্যা করা হয় নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে। নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হয়
মীরজাফরের ছেলে মীর মিরণের নির্দেশে। মীর মিরণ নির্দেশ দেন একজন ঘাতককে যার নাম
মোহাম্মদ বেগ। মোহাম্মদ বেগ মাত্র ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার বংশধর
নবাব সিরাজউদ্দৌলার বংশধর সম্পর্কে আমরা তেমনভাবে কোন ধারণা পাই না বা রাখি
না। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর পর তার বংশধরের কি অবস্থা বা তারা কে কে
আমরা হয়তো অনেকেই জানি না। হয়তো আমরা এটাও জানি না যে তিনি তার অল্প বয়সে
তিনটি বিয়েতে বসেছিলেন। এখন আপনি যদি এসব না জানেন তাহলে এই আর্টিকেল থেকে
জেনে নিন।
ক্রমান্বয় | বংশধর |
---|---|
প্রথম | নবাবের মেয়ে উম্মে জোহুরা ওরফে কুদসিয়া বেগম |
দ্বিতীয় | জোহুরার পুত্র শমসের আলী খান |
তৃতীয় | শমসের আলী খানের পুত্র লুৎফে আলী খান |
চতুর্থ | লুৎফের কন্যা ফাতেমা বেগম |
পঞ্চম | ফাতেমা বেগমের কন্যা হাসমত আরা বেগম |
ষষ্ঠ | হাসমত আরা বেগমের পুত্র সৈয়দ জাকি রেজা |
সপ্তম | সৈয়দ জাকি রেজার পুত্র সৈয়দ গোলাম মুর্তজা |
অষ্টম | সৈয়দ গোলাম মুর্তজার পুত্র সৈয়দ গোলাম মোস্তফা |
নবম | সৈয়দ গোলাম মোস্তফার পুত্র সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেব |
নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোথায় বন্দী হয়েছিলেন
নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোথায় বন্দী হয়েছিলেন এ বিষয়টি আমরা অনেকেই হয়তো জানি না। নবাব সিরাজউদ্দৌলা যখন দেখলেন যে তিনি হারতে বসেছেন তখন তিনি মুর্শিদাবাদে ফিরে আসেন এবং পরিবার নিয়ে পালিয়ে যান। এই পালানোর সময় কখন এবং কিভাবে ধরা পড়ে বা বন্দী হয় এটা আমরা অনেকে জানিনা। আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেননা নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইতিহাসের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা মুর্শিদাবাদে ফিরে তাঁর স্ত্রী লুৎফুন্নেছা এবং মাত্র চার বছরের মেয়ে উম্মে জহুরাকে পালিয়ে যান। বাড়ানোর সময় সামনে মহানন্দা নদী বেঁধে যায়। সেই মহানন্দা নদী পার করার সময় হঠাৎ করে নদীর জোয়ার ভাটা কমে যায় এবং পানি কমে যায় তখন নবাব নৌকা থেকে নেমে যায়। তারপর নবাব একটি মসজিদের কাছে বাজারে খাবারের জন্য যান।
সেই বাজারে একজন ফকির নবাব কে দেখে চিনে ফেলে। ধারণা করা হয় সেই ফকির ছিল নবাবের শাস্তি প্রাপ্ত একটি আসামি যাকে নবাব কান কেটে ফেলার শাস্তি দিয়েছিল। সে নবাব কে চিনে ফেলার পর মীরজাফরের সৈন্যদের খবর দেন এবং সেখানে মীরজাফরের সৈন্যরা নবাবসহ নবাবের পরিবারকে আটক করে ফেলেন।
তবে এখানে আরেকটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায় যেখানে বলা হয় বাজারের লোকজন নবাব কে চিনে ফেলার পর অর্থের লোভে পড়ে মীরজাফরের সৈন্যদের তথা মীরজাফরের ছেলেকে খবর দেন বা সংবাদ দেন তারপর মীর মিরণের নির্দেশে মীরজাফরের সৈন্যরা নবাবসহ নবাবের পুরো পরিবারকে আটক করে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যান।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম স্ত্রীর নাম কি
নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম স্ত্রীর নাম কি এটা কি আপনি জানেন ? আপনি হয়তো নিশ্চিতভাবে বলবেন যে নবাবের প্রথম স্ত্রীর নাম লুৎফুন্নেসা। কিন্তু আপনি এটি জানেন না যে নবাব তার ব্যাক্তি জীবনে তিনবার বিবাহের পিরিতে বসেছেন। আপনি ঘুরেফিরে একটি বিবির নামই জানেন যেটি কিনা তার সবচেয়ে প্রিয় বিবি এবং সর্বশেষ তৃতীয়তম বিবি ছিলেন।
ইতিহাস থেকে নবাবের প্রথম দুই পক্ষের স্ত্রীর সম্পর্কে তেমনভাবে কোন কিছু জানা যায় না। তবে নবাবের তৃতীয় স্ত্রী লুৎফুন্নেছা সম্পর্কে ইতিহাস থেকে অনেক কিছুই জানা যায়। নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর নাম ছিল বেগম যায় জায়েবুন্নেসা। তাছাড়াও নবাবের আরেকটি স্ত্রী ছিল যার নাম ছিল উমদাতুন্নেসা। তবে সকল বিবির চেয়ে তার কাছে পেয়েছিল তার তৃতীয় স্ত্রী লুৎফুন্নেছা। যার সাথে তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিলেন।
পলাশীর যুদ্ধ কত সালে সংঘটিত হয়
পলাশীর যুদ্ধ কত সালে সংঘটিত হয় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আপনি যে কোন চাকরি বা ভর্তি পরীক্ষায় যান না কেন আমাদের দেশে সকল জায়গায় এই প্রশ্নটি অনেক বেশি দেখা যায়। আমরা এতক্ষণ জানলাম পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কেন এবং কিভাবে পরাজয় বরণ করেছিলেন। আপনি কি এই যুদ্ধের নির্দিষ্ট তারিখ এবং সাল সম্পর্কে জানেন।
পলাশীর যুদ্ধ হয়েছিল ভাগীরথী নদীর পাড়ে পলাশীর ময়দানে। এটি একটি ঐতিহাসিক যুদ্ধ যেই যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা যুদ্ধের ময়দানে ও রণকৌশল এর জন্য হেরেছিলেন না বরং হেরেছিলেন ষড়যন্ত্রের কারণে এবং বিশ্বাসঘাতকতার কারণে। এই যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের ফলে বাংলা চলে যায় ইংরেজদের দখলে। আর এই যুদ্ধটি হয়েছিল .২৩ শে জুন ১৭৫৭ সালে পলাশীর ময়দানে।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারীর নাম
আপনি নবাব সিরাজউদ্দৌলার সম্পর্কে অনেক জেনেছেন এবং তিনি কিভাবে যুদ্ধে পরাজয়ের বরণ করলেন সেটাও আপনি খুব ভালোভাবে জানেন। তবে আপনি কি জানেন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে কে হত্যা করেছিল। হয়তো আপনি জানেন আবার অনেকেই জানেন না যারা জানেন না তারা এখান থেকে জেনে নিন। যে নবাব সিরাজ হত্যা করেছে হত্যা করেছে তাকে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক বলা হয়।
নবাব সিরাজকে হত্যা করেছেন মোহাম্মদ বেগ। মাত্র ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সিরাজকে হত্যা করেন। মীরজাফরের নির্দেশে তার ছেলে মীরমিরণ মোহাম্মদ বেগ নামক একজন ঘাতককে সিরাজকে হত্যা করার জন্য নিযুক্ত করেন। সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক বলার কারণ হচ্ছে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পিতা-মাতা এই মোহাম্মদ বেগকে কে নিজের সন্তানের মত করে লালন পালন করেছিলেন। সেই কারণেই এই বেগকে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক বলা হয়।
লেখক এর শেষ বক্তব্য ঃ পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ
সম্মানিত পাঠকগণ আমরা পোস্টে আলোচনা করেছি পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ সম্পর্কে এবং আরো অন্যান্য সকল বিষয় নিয়ে। নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। ইতিহাসে বাংলা বলা হত তিনটি জায়গা নিয়ে বাংলা বিহার এবং উড়িষ্যা নিয়ে। নবাব সিরাজউদ্দৌলা তার ব্যক্তির জীবনে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। কিন্তু তার পেছনে ঘটে যাওয়া ষড়যন্ত্র সেই সোচ্চার হওয়া টাকে বেশিদিন টিকতে দেয় নাই।
পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ সম্পর্কে আমরা এই পোস্টে যা যা আলোচনা করেছি সকল বিষয় ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা এবং গবেষণা করার পর লেখা হয়েছে। এখানে কিছু কিছু বিষয় নতুন করে গবেষণা করেও লেখা হয়েছে। আমরা আশা করছি যে আপনারা যদি এ সকল বিষয় সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন তাহলে অধিক উপকৃত হবেন।
ট্রাজেডি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url