বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী ২০২৪
বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী সম্পর্কে আপনি কি জানেন ? যদি জেনে না থাকেন তাহলে
আমাদের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। কেননা আমাদের বাংলাদেশের বিভিন্ন
পরীক্ষায় এসব বৃহত্তম এবং ক্ষুদ্রতম নদী সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়।
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। বাংলাদেশ অসংখ্য বড় বড় নদী রয়েছে। এখন আপনি
যদি এসব নদীর মধ্যে সবচেয়ে বড় নদী সম্পর্কে না জানে তাহলে আমাদের এই আর্টিকেল
থেকে সম্পূর্ণভাবে জেনে নিন।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী ২০২৪
বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী
বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী সম্পর্কে যদি আপনি জেনে না থাকেন তাহলে দুশ্চিন্তার
কিছু কেননা এখন আমরা বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী সম্পর্কের বিস্তারিত আলোচনা করব।
বাংলাদেশের একটি নদীমাতৃক দেশ। বাংলাদেশের প্রায় ১০০৮টি ছোট বড় নদী
রয়েছে। বাংলাদেশে অনেক আন্তর্জাতিক মানের নদী রয়েছে যা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়
নদী গুলোর মধ্যে অন্যতম। তাহলে জানুন কোন নদী বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড়
বা বৃহত্তম।
বাংলাদেশ অনেক বড় বড় নদী রয়েছে। যাদের মাধ্যমে অন্যতম পদ্মা, মেঘনা, যমুন
এবং ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি আরো অনেক নদী রয়েছে। আমরা এই পোস্টে নিম্নে এ সকল
নদী নিয়ে আলোচনা করব যে কোনটি কত বড় এবং কে সবথেকে বড়। তাহলে আসুন বাংলাদেশের
নদী সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।
পদ্মা নদী
পদ্মা বাংলাদেশের একটি আন্তর্জাতিক নদী। কেননা এই নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের
হিমালয়ের গাঙ্গোত্রী হিমবাহ। পদ্মা নদী ভারতে গঙ্গা নামে পরিচিত। এই নদী
বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা দিয়ে প্রবেশ করেছেন। বাংলাদেশের প্রবেশ করার পর নাম
পরিবর্তন হয়ে পদ্মা নদীতে রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশের নদী রক্ষা কমিশন ২০২৩
অনুযায়ী পদ্মা নদীর মোট দৈর্ঘ্য ৩৪১ কিলোমিটার।
কিন্তু বাংলাদেশে মোট ১৪৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে যেটি বাংলাদেশের নদী গুলোর
মধ্যে সবচেয়ে বেশি পথ অতিক্রম করা নদী। পদ্মা নদী রাজশাহী জেলা দিয়ে
কুষ্টিয়া দিয়ে মেঘনা এবং যমুনা নদীর সাথে মিলিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। পদ্মা
বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী।
মেঘনা নদী
মেঘনা বাংলাদেশের প্রধান নদী গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি নদী। মেঘনা নদীর
উৎপত্তিস্থল ভারতের আসামের নাগা মনিপুর পাহাড়ের দক্ষিণ লুসাই পাহাড়ে। মেঘনা নদী
বাংলাদেশের সিলেট জেলা দিয়ে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দুটি শাখায় প্রবেশ করেছে।
মেঘনা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী। কেননা মেঘনা নদীর দৈর্ঘ্য ২২১ কিলোমিটার
জর্জ এমপি ৩ বই অনুযায়ী। মেঘনা নদী বাংলাদেশের ৩৬ ট উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত
হয়েছে। আর সেই কারণেই এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী।
যমুনা নদী
যমুনা নদী বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত নদী। যমুনা নদীর উৎপত্তি হয় ব্রহ্মপুত্র
নদী থেকে। ১৭৮৭ সালে ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর দিয়ে একটি ভূমিকম্প প্রবাহ এবং সেই
ভূমিকম্পের ফলে ব্রহ্মপুত্র নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে একটি নতুন স্রোতধারা সৃষ্টি
হয় আর সেই স্রোতধারারি নাম যমুনা নদী। যমুনা নদীর উপরে একটা বিখ্যাত ব্রিজ
রয়েছে যার নাম বঙ্গবন্ধু ব্রিজ যার দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার। বাংলাদেশে যমুনা
নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬০ কিলোমিটার। তাই এই নদী বাংলাদেশের বৃহত্তম নদীর মধ্যে
অন্যতম একটি।
ব্রহ্মপুত্র নদ
ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশের নদী গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পথ অতিক্রম করা নদী।
ব্রহ্মপুত্র নদী মূলত একটি নদ। নদ এবং নদীর পার্থক্য হচ্ছে লিঙ্গ
ভেদে। ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তিস্থল তিব্বতের হিমালয়ের কৈলাশ শৃঙ্গের
নিকটে মানুষ সরোবর হ্রদ থেকে। ব্রহ্মপুত্র নদ কুড়িগ্রাম জেলা দিয়ে বাংলাদেশের
মধ্যে প্রবেশ করেছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের দৈর্ঘ্য কি আপনার জানা আছে। যদি জানাজা থাকে তাহলে জানুন
যে ব্রহ্মপুত্র নদের দৈর্ঘ্য মূলত ২৮৫০ কিলোমিটার তবে ব্রহ্মপুত্র নদ
বাংলাদেশের রয়েছে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্র নদও মূলত
বাংলাদেশের একটি আন্তর্জাতিক মানের নদী যা তিনটি দেশ দিয়ে অতিক্রম করেছে। সেই
তিনটি দেশ হলো ভারত, বাংলাদেশ এবং চীন।
কর্ণফুলী নদী
কর্ণফুলী নদী বাংলাদেশের বড় নদী সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি নদী। কর্ণফুলী বাংলাদেশ
প্রতি জনপ্রিয় একটি নদী। বাংলাদেশের সবচেয়ে খরস্রতা নদী হিসেবে গণ্য করা হয় এই
কর্ণফুলীকে। কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের মিজোরাম লুসাই পাহাড়ের লংলেহ
থেকে। কর্ণফুলী নদীর উপরে বাংলাদেশের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে যা
কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত। তাছাড়াও এই কর্ণফুলী নদীর ভেতর দিয়ে একটি তিন
কিলোমিটারের টানেল রয়েছে যার নাম বঙ্গবন্ধু টানেল বা কর্ণফুলী টানেল। কর্ণফুলী
নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬১ কিলোমিটার। এই নদী চট্টগ্রাম দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত
হয়েছে।
তিস্তা নদী
তিস্তা বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। তিস্তা নদীর উৎপত্তি
ভারতের সিকিম থেকে। এই নদী বাংলাদেশের প্রবেশ করে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে।
তিস্তা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদী গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি নদী। তিস্তা
নদীর ওপর একটি বাধ রয়েছে যার নাম তিস্তা ব্যারেজ অথবা তিস্তা বাঁধ। তিস্তা নদী
বাংলাদেশের মধ্যে বৃহত্তম হওয়ার কারণ হচ্ছে এর দৈর্ঘ্য কেননা তিস্তার
দৈর্ঘ্য প্রায় ১১৩ কিলোমিটার।
গোমতী নদী
গোমতী নদী বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার একটি নদী। এই নদীর উৎপত্তি হয় ত্রিপুরা
পাহাড়ের ডুমুর থেকে। গোমতী নদীতে এক সময় কুমিল্লা লোকজন কুমিল্লা শহরের দুঃখ
বলে ডাকতেন। গোমতি নদী একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। গোমতি নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৫
কিলোমিটার। গোমতী নদী বেশি খোরস্রোতা সম্পন্ন একটি নদী।
সাঙ্গু নদী
সাঙ্গু নদীর নাম করণ করা হয় ১৮৬০ সালে ইংরেজ কর্তৃক। সাঙ্গু নদীর উৎপত্তিস্থল
আরাকান পাহাড় থেকে। এই সাঙ্গু নদী চট্টগ্রাম এবং বান্দরবানের নদী। এই সাঙ্গু নদীর
দৈর্ঘ্য প্রায় ২৯৪ কিলোমিটার এবং এই নদীকে সচ্ছ পানির নদীও বলা হয়ে থাকে।
হালদা নদী
হালদা নদী বাংলাদেশের এমন একটি নদী যেই নদী বাংলাদেশের উৎপত্তি এবং বাংলাদেশের
সমাপ্তি হয়েছে। হালদা নদী কর্ণফুলীতে পতিত হয়েছে এবং কর্ণফুলী বঙ্গোপসাগরে পতিত
হয়েছে। হালদা নদী হচ্ছে বাংলাদেশ তথা এশিয়ার সবচেয়ে বড় মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র।
কেননা এই নদীতে বাণিজ্যিকভাবে রেনুপনা সংগ্রহ করা হয়। হালদা নদীর উৎপত্তিস্থল
খাগড়াছড়ির বাদনাতলী পর্বত শৃঙ্গে। হালদা নদী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদীর
মধ্যে অন্যতম কারণ এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০৬ কিলোমিটার। এই নদীর নামে একটি ভ্যালি
রয়েছে যা বান্দরবান অবস্থিত।
আমাদের শেষ কথা ঃ বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী
সম্মানিত পাঠকগণ আমরা এই পোস্টে আলোচনা করেছেন বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী ২০২৪
সম্পর্কে এবং আরো অন্যান্য সকল বিষয় নিয়ে। নদী একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের
জন্য। কেননা আমাদের দেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। আমাদের দেশে অসংখ্য ছোট বড় নদী
রয়েছে। আবার এমন অনেক নদী রয়েছে যেগুলো আন্তর্জাতিক স্বীকৃত নদী।
বাংলাদেশের নদী আমাদের বাণিজ্যিকভাবে অনেক উন্নত করেছেন কেননা আমাদের দেশের
নদীতে মাছের অনেক চাহিদা রয়েছে। যেমন আমাদের দেশের ইলিশ গোটা বিশ্বের ৮০
শতাংশ চাহিদা পূরণ করে। তাহলে বোঝা যায় আমাদের দেশের নদী এবং মাছের চাহিদা
কতটুকু। তাই আপনারা সচেতন থাকবেন যাতে করে আপনার মাধ্যমে কোন একটি নদীর ক্ষতি যেন
না হয়।
ট্রাজেডি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url