অতিরিক্ত এলার্জি হলে কি কি করনীয়
অতিরিক্ত এলার্জি হলে কি কি করনীয় আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই পোস্ট থেকে
আপনি তা জেনে নিতে পারেন। কেননা অতিরিক্ত এলার্জি হলে আমাদের শরীরে অনেক র্যাশ
এবং অনেক অস্বস্থির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই এলার্জি।
তাই আসুন জেনে নিন এই পোস্ট থেকে যে কি কি করবেন অতিরিক্ত এলার্জি হলে। তাছাড়া এই
পোস্টে আপনারা জানতে চলেছেন যে রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে। তাই
আসুন এই পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত সকল কিছু জেনে নিন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ অতিরিক্ত এলার্জি হলে কি কি করনীয়
অতিরিক্ত এলার্জি হলে কি কি করনীয়
অতিরিক্ত এলার্জি হলে কি কি করনীয় আপনারা এই পোষ্টের এ পর্যায়ে এটি জানতে
পারবেন। এলার্জি একটি খুবই কমন সমস্যা আমাদের জন্য। অতিরিক্ত এলার্জির ফলে
অনেক সময় আমাদের প্রচুর অস্বস্থির মধ্যে পড়তে হয়। আবার এই এলার্জি অতিরিক্ত
হয়ে গেলে অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের মতো অনেক বড় বড় সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
তাই আসুন জেনে নিন অতিরিক্ত এলার্জি হলে কি কি করনীয়।
আরো পড়ুন ঃ গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে কি হয়
আপনার যদি অতিরিক্ত এলার্জি হয়ে যায় তাহলে আপনাকে দেখতে হবে যে কোন জিনিস থেকে
আপনার বেশি এলার্জি হচ্ছে । যদি আপনি বুঝতে পারেন যে কোন জিনিসটা আপনার বেশি
এলার্জি হয় তাহলে সেই জিনিস থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। কারণ এলার্জি এমনি
এমনি হয় না কোন কিছুর মাধ্যমে এলার্জি ছড়িয়ে থাকে। তাহলে এখন জা্নি যে কি কি
করবেন অতিরিক্ত এলার্জি হলে।
- আপনার যদি ঠান্ডা লাগায় দেখা যায় তাহলে আপনি ঠান্ডা লাগা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। আপনার জন্য কোনভাবেই ঠান্ডা না লাগে সেই দিকে খেয়াল করবেন।
-
ঠান্ডা লাগায় এলার্জি থাকলে আপনি খালি পায়ে মেজে বা ফ্লোরে হাঁটাহাঁটি বন্ধ
করে দিন কারণ খালি পায়ে মেঝেতে হাঁটলেও ঠান্ডা লাগতে পারে।
-
আপনার যদি কোন খাবারে অ্যালার্জি থাকে তাহলে সেই খাবার থেকে যতটুকু সম্ভব
দূরে থাকার চেষ্টা করবেন।
-
অনেক সময় গরম বা ঘামের জন্যও এলার্জি হয়ে থাকে। তাই আপনি যদি অতিরিক্ত
পরিশ্রম করে থাকেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা বা বাতাসে যাওয়ার চেষ্টা করবে।
যাতে আপনার শরীর বেশিক্ষণ ঘেমে না থাকে।
-
অনেক সময় অনেকের বিভিন্ন ধাতুতে এলার্জি থাকে। যেমন বিভিন্ন ধরনের আংটি,
ব্রেসলেট, কানের দুল এবং গহনা অলংকার। এসব ধাতুতেও অনেকের এলার্জি থাকে তাই
আপনার যদি এসবে এলার্জি থাকে তাহলে এসব থেকে কিছুটা দূরে থাকবেন।
-
অনেক সময় গৃহপালিত পশুর জন্যেও এলার্জি হতে পারে। তাই গৃহপালিত পশুর
বাসস্থান আপনার বাসার বাইরে করায় উত্তম হবে।
-
বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয় বা ড্রিংকসে এলার্জি থাকতে পারে। তাই সেগুলো
থেকে দূরে থাকা আপনার জন্য উত্তম হবে।
অতিরিক এলার্জি হলে আপনি এসব প্রতিরোধ করতে পারেন তবে আপনার যদি বেশি
অ্যালার্জি হয়ে যায় তাহলে আপনার একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখানো উচিত।
তাছাড়া আপনি আন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেয়ে দেখতে পারেন। এই ওষুধ এলার্জির
জন্য খুবই ভালো কাজ করে থাকে। এই অ্যান্টিহিস্টামিন খাবার ফলে ঘুম একটু
বেশি হয়ে থাকে। এতে অনেকেই অনেক চিন্তার মধ্যে পড়ে যায় তাই এখানে চিন্তার
কোন বিষয় নেই।
তবে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেয়েও যদি আপনার অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণে না
আসে তাহলে আপনার একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানো অতীব জরুরী। কারণ এই এলার্জি
নিয়ে বসে থাকা ঠিক নয়। কেননা এই এলার্জি অনেক বড় বড় সমস্যার কারণ হয়ে
থাকে। যেমন অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঘা হয়ে যাওয়া
ইত্যাদি আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে এই এলার্জির জন্য।
আমরা এতক্ষণ আলোচনা করলাম অতিরিক্ত এলার্জি হলে কি কি করনীয় বিষয় সম্পর্কে।
আমরা আশা করছি যে আমরা যা যা আলোচনা করলাম যেমন কি কি করবেন অতিরিক্ত এলার্জি
হলে এ সকল বিষয় সম্পর্কে আপনি সম্পূর্ণ ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। এখন আমরা
আলোচনা করতে চলেছি যে রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে।
রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়
রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় কি আপনি জানতে চাচ্ছেন। তাহলে প্রথমে আপনাকে
সম্পূর্ণ ভাবে নিশ্চিত হতে হবে যে আপনার রক্তে এলার্জি রয়েছে। এই নিশ্চিত হওয়ার
জন্য আপনি চাইলে ডাক্তারের কাছে যেতে পারেন তাছাড়া আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন।
আপনি যদি আপনার বাড়ির ধুলোময়লা পরিষ্কার করেন তারপর যদি আপনার শরীরে
চুলকাতে থাকে বা শরীরের র্যাশ দেখা যায়। তাহলে বুঝবেন আপনার এলার্জি
রয়েছে।
তাছাড়াও যদি আপনার বিভিন্ন খাবারে যেমন পুঁইশাক পুটি মাছ বিভিন্ন ধরনের
সামুদ্রিক মাছ হাঁসের মাংস বা গরুর মাংস খাওয়ার পদ্ধতি আপনার শরীর চুলকাতে
থাকে, আপনার যদি নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং আপনার শরীরে যদি লাল লাল চাকা চাকা
ভাব দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে আপনার রক্তে এলার্জি রয়েছে। আপনি যদি নিশ্চিত
হয়ে যান যে আপনার রক্তে রয়েছে এখন আপনি জেনে নিতে পারেন যে রক্তের এলার্জি
দূর করার মাধ্যম সম্পর্কে।
আরো পড়ুন ঃ দাড়ি গজানোর ইসলামিক উপায়
প্রথমে আপনাকে যেটি করতে হবে সেটি হল আপনার যে যে কারণে এলার্জির লক্ষণ
দেখা যায় সেসব বিষয় থেকে আপনাকে দূরে থাকতে হবে। ধরেন আপনি যদি হাঁসের মাংস,
খাসির মাংস, ডাল, পুঁইশাক অথবা গরুর মাংস এভাবে এলার্জি থাকে তাহলে আপনাকে এসব
খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। আবার আপনার যদি ধুলোবালি বা খোলা পানিতে গোসল করাতে
এলার্জি থাকে তাহলে আপনাকে এসব থেকেও দূরে থাকতে হবে।
তাছাড়াও আপনি চাইলে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে পারেন। এলার্জি বিষয়ে যারা
বিশেষজ্ঞ তাদের বলা হয় হেমাটোলজিস্ট (HEMATOLOGIST)। অথবা আপনি নিজেও
হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেয়ে এলার্জিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। তাছাড়া
আপনাকে এলার্জি জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবেই। তাহলে আসুন এখন জেনে নিন
রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী কোন কোন খাবার থেকে দূরে থাকা উত্তম আপনার জন্য।
রক্তের গ্রুপ এ -ঃ আপনার যদি রক্তের গ্রুপ এ ক্যাটাগরির হয়ে
থাকে তাহলে আপনাকে যেসব খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে সেগুলো হল হাঁসের মাংস,
গরুর মাংস, ডিম, সামুদ্রিক মাছ, কোয়েল পাখি, কাজুবাদাম, মাগুর মাছ, দুধ,
মাখন, জলপাই, পেঁপে, আম, টমেটো, মিষ্টি আলু এবং বেগুন ইত্যাদি এই সকল
খাবার যা আপনার জন্য এলার্জি কারণ হতে পারে।
রক্তের গ্রুপ বি -ঃ আপনার যদি রক্তের গ্রুপ বি ক্যাটাগরির হয়ে
থাকে তাহলে আপনাকে যেসব খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে সেগুলি হল হাঁসের মাংস,
গরুর মাংস, কোয়েল পাখি, ডিম, দুধ, দই, চিনা বাদাম, পেস্তা বাদাম, নারিকেল,
ভুট্টা, কাঁকড়া, চিংড়ি, টমেটো, কুমড়ো এবং ডালিম ইত্যাদি যা আপনার এলার্জির
কারণ হতে পারে।
রক্তের গ্রুপ ও -ঃ আপনার রক্তের গ্রুপ যদি ও ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে
তাহলে আপনাকে যেসব খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে সেগুলো হল রাজহাঁস, স্ট্রবেরি,
আইসক্রিম, শিং মাছ, মাগুর মাছ, চিনা বাদাম, কাজুবাদাম, অ্যাভোকাডো, ফুলকপি,
বাঁধাকপি, নারিকেল, দই, লাল আলু, বেগুন এবং দুধ ইত্যাদি এসব খাবার আপনার
এলার্জির কারণ হতে পারে।
রক্তের গ্রুপ এবি -ঃ এবি গ্রুপের রক্ত যদি আপনার হয়ে থাকে তাহলে
আপনাকে যেসব খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে সেগুলি হল হাঁসের মাংস, গরুর মাংস,
চিংড়ি, কাঁকড়া, পারমিজন, মোলা, কলা, পেয়ারা, আইসক্রি, লবস্টার,
কুমড়া, নারিকেল ডালিম এবং কমলা এসব খাবারে আপনার এলার্জি হতে পারে।
মুখে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়
মুখে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় আপনার জানা অত্যন্ত জরুরী যদি আপনার মুখে
এলার্জি থেকে থাকে। মুখ হল মানুষের সৌন্দর্য প্রকাশের আয়না। একজন মানুষ তার
শরীরের সবথেকে বেশি যত্নে থাকে তার মুখে প্রতি। আর সেই মুখ যদি এলার্জির কারণে
তার সৌন্দর্যতা হারিয়ে ফেলে তাহলে আমাদের অনেকের চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
সেই জন্য আসুন আপনি আমাদের এই পোস্ট থেকে জেনে নিন মুখে এলার্জি দূর করার
ঘরোয়া উপায়।
নিম পাতা ঃ ত্বকের জন্য বা মুখের জন্য নিম পাতার উপরে আর কোন
বড় ওষুধ নেই। যদি আপনার মুখে বেশি এলাচি দেখা যায় তাহলে নিম পাতার কয়েকটি
পাতা বেটে নিন এবং আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিন। এরপর প্রায় ৩০ মিনিট পর সেই
নিম পাতা স্বচ্ছ সাদা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহারে ফলে দেখবেন
আপনার মুখে এলার্জি দূর হতে শুরু করেছে।
অলিভ অয়েল ঃ অলিভ অয়েল আমাদের ত্বক বা মুখের জন্য অনেক উপকারী। অলিভ অয়েল মুখের
এলার্জিতে খুব ভালো কাজ করে থাকে। আপনার মুখে যেখানে এলার্জির প্রভাব দেখা যায়
সেখানে ভার্জিন অলিভ অয়েল একটু মালিশ করে নিন এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করার পর
দেখবেন আপনার এলার্জি দূর হতে শুরু করেছে। তবে আপনি যদি স্পেনের অলিভ অয়েল পান
তাহলে আরও অনেক ভালো হয়।
তুলসী পাতা ঃ তুলসী পাতা কাশির জন্য যেমন উপকারী তেমন ত্বকের
জন্য অনেক উপকারী। তুলসী পাতায় এন্টি ইনফ্লামেটরি থাকার কারণে এলার্জি
বা চুলকানিতে অনেক বেশি কার্যকরী। চার থেকে পাঁচটি তুলসীপাতা ভালোভাবে ধুয়ে
নিন এরপর বেটে নিন। এরপর আপনার আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে নিন এবং ৩০ মিনিট পর তা
পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে বেশ কয়েকদিন ব্যবহার করার ফলে দেখবেন আপনার
মুখের এলার্জি দূর হতে শুরু করেছে।
নারিকেল তেল ঃ নারকেল তেল বড় এবং বাচ্চাদের মুখের এলার্জি
দূর করনের সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। নারিকেল তেল হালকা একটু গরম করে নেওয়ার পর
আপনার আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিন। এভাবে ভালো না হওয়া পর্যন্ত দিনে তিনবার
ব্যবহার করতে থাকুন। আশা করা যায় আপনার মুখের এলার্জি টি খুব তাড়াতাড়ি
নির্মল হয়ে যাবে।
অ্যালোভেরা ঃ অ্যালোভেরায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি
ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে যার ফলে এলার্জির বিরুদ্ধে অনেক কাজ করে থাকে
অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা পাতার ভেতর থেকে কয়েক গ্রাম অ্যালোভেরা জেল বের করে
নিন বা বাজার থেকে কেনে আনা জেল নিন এবং সেই জেলটি আপনার
ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিন। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর সে জেলটি পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করা ফলে দেখবেন আপনার মুখের এলার্জি দূর হতে শুরু করেছে।
কোল্ড শাওয়ার ঃ ঠান্ডা পানি বা বরফ পানি আমাদের ত্বকের জন্য
অনেক উপকারী। আপনি যদি প্রতিদিন ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করে থাকেন তাহলে আপনার
ত্বকের বা মুখের এলার্জি দূর হতে থাকবে। আপনি চাইলে বড় পানি দিয়ে আপনার মুখ
মালিশ করতেও পারে এতেও এলার্জি থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
বেকিং সোডা ঃ বেকিং সোডা মুখের এলার্জির খুব ভালো কাজ করে
থাকে। তাই এক চামচ বেকিং সোডার সাথে সামান্য পরিমাণ চিনি এবং পানি মিশিয়ে নিন।
এরপর এই পেস্টটি আপনার মুখের ক্ষতস্থানে বা আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিন। তারপর
৩০ মিনিট পর পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন এবং এভাবে তিন থেকে চারবার ব্যবহার
করুন। তাহলে দেখবেন আপনার মুখের এলার্জি ভাব দূর হয়ে যাবে।
আপেল ভিনেগার ঃ আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
অ্যাসিটিক অ্যাসিড যা ত্বক বা মুখের এলার্জি বিরুদ্ধে খুব ভালো কাজ করে থাকে।
তাই এক চামচ ভিনেগারের সাথে এক চামচ গরম পানি মিশিয়ে নেই এবং আপনার আক্রান্ত
স্থানে লাগিয়ে রাখুন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর কাজ হয়ে ফেলুন। এভাবে চার থেকে
পাঁচবার ব্যবহার করার ফলে দেখবেন আপনার মুখের এলার্জি দূর হতে শুরু করেছে।
নাকের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়
নাকের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় আপনার জানা অত্যন্ত জরুরী যদি আপনার নাকে
অ্যালার্জি থাকে। নাকের এলার্জি বা যাকে মেডিকেলের ভাষায় বলা হয় এলার্জিক
রাইনাইটিস। এই নাকের এলার্জি অনেক বেশি অসুস্থ্যের কারণ হয়ে থাকে। এই এলার্জি
বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে যেমন ধুলোবালি, অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা, হঠাৎ করে
আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়া এবং এটি বংশগত কারণেও হতে পারে। তাহলে আপনারা
যদি নাকে এলার্জি থাকে তাহলে জেনে নিন এই এলার্জি দূর করণেকরণীয় সম্পর্কে।
- আপনার যে বিষয়ে নাকের এলার্জি অতিরিক্ত বেড়ে যায় সেই সকল জিনিস থেকে আপনার দূরে থাকায় উত্তম বলে বিবেচিত করেন বিশেষজ্ঞরা।
-
আপনার বাসায় যদি কুকুর বা বিড়াল পালন করে থাকেন তাহলে এসব প্রাণীর কাছে
যাওয়া বন্ধ করে দিন আপনি কারণ এতে আপনার এলার্জির পরিমাণ বৃদ্ধি হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে।
-
আপনার যদি এই এলার্জি রাইনাইটিস থাকে তাহলে কোন সময় ফ্রিজের ঠান্ডা জাতীয়
কোমল পানীয় বা আইসক্রিম খাবেন না কারণ এইসব ঠান্ডা লাগার কারণে আপনার
এলার্জির পরিমাণ বৃদ্ধি হতে পারে।
-
শীতকালে এই সমস্যা অনেক বেশি বাড়তে দেখা যায়। তাই আপনি শীতকালে গোসল করার
সময় হালকা কুসুম গরম পানিতে গোসল করার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার
এলার্জিক রাইনাইটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
-
আপনার যদি এলাজিক রাইনাইটিস বা নাকের এলার্জির পরিমাণ বেড়ে যায় তাহলে
অবশ্যই দিনে দুই থেকে তিনবার গরম পানির ভাব নিবেন।
-
আপনি যখনই বাহিরে বের হবেন বা ধুলোময়পরিবেশে যাবেন তখনই নির্দিষ্ট একটি
মাস্ক ব্যবহার করবেন। তবে সার্জিক্যাল মাস্কব্যবহার করা অতি উত্তম।
-
আপনি সর্দি বা ঠান্ডা লাগা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন। তাছাড়া একজন
সর্দি লাগা বা ফ্লুতে আক্রান্তকারী রোগের কাছ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা
করবেন।
-
আপনার যদি নাকে এলার্জি থাকে তাহলে অতি গরমে কোন ধরনের কাজ করবেন না। আর
যদি আপনার করতে হয় তাহলে কার শেষে সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা জায়গায় চলে আসতে
হবে।
-
বাড়ির চারিদিকে খোলামেলা পরিবেশ রাখার জন্য চেষ্টা করবেন। তাছাড়াও
স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ থেকে বাড়িতে মুক্ত রাখবেন।
-
তাছাড়াও আপনি অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন যা অতিরিক্ত ঘুম
ঘুম ভাব আরে না এরকম ওষুধ। তাছাড়াও আপনি নাকের এলার্জির জন্য নির্দিষ্ট
ড্রপও ব্যবহার করতে পারেন।
-
এসব হল ঘরোয়া উপায় তবে আপনার যদি অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যায় তাহলে একজন
নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কে দেখিয়ে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী
ওষুধ খাবেন এবং চলাফেরা করবেন তাহলে আপনার এই এলার্জি দূর হতে বাধ্য।
আরো পড়ুন ঃ গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
তাহলে আমরা আলোচনা করলাম নাকের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। আমরা
আশা করছি যে আপনারা সম্পূর্ণভাবে এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আসুন
পরবর্তী বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন । পরবর্তী বিষয়টি হলো কোল্ড এলার্জি
দূর করার উপায় সম্পর্কে।
কোল্ড এলার্জি দূর করার উপায়
কোল্ড এলার্জি দূর করার উপায় জানা আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যদি আপনার
অতিরিক্ত এলার্জির সমস্যা থেকে থাকে। সাধারণত কোল্ড এলার্জি অ্যাটাক করে থাকে
শীতকালে বা শীত শীত ভাব আসলে। এই কোল্ড এলার্জি অ্যাটাকের ফলে, যে যে
অঙ্গের সমস্যা হয় তার মধ্যে প্রধান হল নাক এবং মুখ। সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা
দেয় নাকের মাধ্যমে। তাহলে আপনারা যদি এই সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আসুন জেনে নিন
কোল্ড এলার্জি দূর করার উপায়।
- আপনার যদি কোল্ড এলার্জির সমস্যা থাকে তাহলে আপনি কখনোই ঠান্ডা বা স্যাঁতশেতে জায়গায় থাকবেন না।
-
যেহেতু এটি শীতকালে বেশি প্রভাব ফেলে তাহলে শীতকালে আপনারা যতটুকু সম্ভব
সচেতন থাকার চেষ্টা করবেন যাতে আপনাদের ঠান্ডা বা সর্দি না লেগে যায়।
-
আপনার যদি প্রতিদিন সকালে জগিং করার অভ্যাস থাকে তাহলে প্রতিদিন বাড়ি থেকে
বের হওয়ার আগে ভালোভাবে নিজের নাক মুখ ঢেকে বের হবেন।
-
শীতকালে অবশ্যই আপনি সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বা সব সময় খালি পায়ে ফ্লোরে
হাঁটবেন না। এতে করে আপনার পায়ের মাধ্যমে ঠান্ডা শরীরে লেগে যেতে পারে ফলে
আপনার এলার্জি বেড়ে যেতে পারে।
-
আপনি এই এলার্জি রোধ করতে চাইলে নাকের এলার্জি থেকে মুক্ত হওয়ার ড্রপ
ব্যবহার করতে পারেন সেই সাথে হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।
-
তবে এ সমস্যা যদি আপনার বেশি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন নাক কান গলা
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া আপনার জন্য অতি জরুরী। কেননা এই এলার্জি
থেকে অনেক বড় বড় সমস্যা হতে পারে যেমন ডায়াবেটিস এবং শ্বাসকষ্ট।
আমরা এতক্ষণ আলোচনা করলাম কোল্ড এলার্জি দূর করার উপায়। আমরা আশা করছি যে
আপনারা এই সকল বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। তাহলে আসুন
আপনারা পরবর্তী টপিক সম্পর্কে জেনে নিন । পরবর্তী টপিকটি হলো পায়ের এলার্জি
দূর করার উপায়।
বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার উপায়
বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে আপনার জানা অত্যন্ত জরুরি যদি আপনার
বাচ্চার এলার্জি থেকে থাকে। বাচ্চাদের জন্য এলার্জি অনেক ক্ষতিকর হয়ে থাকে
কেননা বাচ্চার যখন প্রভাব দেখা দেয় তখন বাচ্চার ক্ষুধা মন্দা দেখা
যায়। তাছাড়া বাচ্চাদের শরীরে এলার্জি কঠিন আকারে বের হয়। এই জন্য অনেক
বাচ্চা শরীরে ঘা হয়ে যায় ফলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাহলে আপনার
বাচ্চার এলার্জি থাকে তাহলে এই পোস্ট থেকে জেনে নেই বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার
উপায়।
- বাচ্চারা ধুলোবালিতে খেলতে অনেক বেশি ভালোবাসে। তাই তারা সবসময় বাড়িতে খেলতে চায়। বাচ্চাদের তো খেলাধুলা আটকানো যাবে না তবে তাদের খেলাধুলা শেষে সঙ্গে সঙ্গে গোসল করিয়ে দেওয়া উত্তম।
-
বাসায় যদি কুকুর বা বিড়াল জাতীয় কোন প্রাণী থাকে তাহলে তাদের কাছ থেকে
আপনার বাচ্চাকে একটু দূরে রাখুন। কেননা এই কুকুর বা বিড়াল অথবা লোম জাতীয়
প্রাণীর আশেপাশে আসার কারণে অনেক সময় অ্যালার্জি দেখা দেয়।
-
বাচ্চারা আইসক্রিম খেতে খুব বেশি পছন্দ করে থাকে। আর এলার্জি হওয়ার মূল
কারণ কিন্তু বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগা। তাই আপনি আপনার বাচ্চাকে আইসক্রিম
খাওয়াবেন না খাওয়ালেও খুব কম পরিমাণে খাওয়াবেন।
-
বাচ্চারা যখন খেলাধুলা করে তখন তাদের শরীর অনেক বেশি ঘেমে যায়। সেই ঘাম
যদি শরীরে থেকে যায় তাহলে অ্যালার্জি দেখা দেওয়া সম্ভাবনা থাকে। তাই
বাচ্চা খেলার শেষে সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চার গা ভালোভাবে মুছে দিবেন বা গোসল
করিয়ে দিবেন।
-
বাচ্চাদের যদি অতিরিক্ত এলার্জি বেড়ে যায় তাহলে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ
ডাক্তার কে দেখিয়ে দেবে যাতে করে খুব তাড়াতাড়ি এলার্জির সমস্যা থেকে
মুক্তি পাওয়া যায়।
- বাচ্চাদের দুধ, আইসক্রিম এবং চকলেট এসব জাতীয় খাদ্য থেকে এলার্জি বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই এসব খাবার একটু কম খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। তবে দুধ আপনি কিছু সময়ের জন্য প্রতিনিয়ত খাওয়াতে পারেন। তবে অতি তাড়াতাড়ি বাচ্চার দুধ খাওয়া কমিয়ে দেওয়া উত্তম।
তাহলে আমরা এতক্ষণ আলোচনা করলাম বাচ্চাদের এলার্জি দূর করনের উপায়। আমরা আশা
করছি যে আপনারা সম্পূর্ণভাবে এ বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আসুন আপনারা
আপনাদের পরবর্তী টপিক সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। পরবর্তী হলো পায়ের
এলার্জি দূর করার উপায়।
পায়ের এলার্জি দূর করার উপায়
পায়ে এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে আপনার জানা অত্যন্ত জরুরী যদি আপনার
পায়ে অ্যালার্জি থাকে। পায়ের এলার্জি শীতকাল এবং বর্ষাকালে প্রচন্ড ভাবে দেখা
যায়। এটি হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। পায়ের এলার্জি অনেক বেশি অস্বস্তির
কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পায়ের এলার্জির বিভিন্ন লক্ষণ রয়েছে পা ফাটা গোড়ালির
চারিধারে ফুলে যাওয়া পায়ে ফুসি ফুসি ঘা বের হওয়া আরো অনেক লক্ষণ রয়েছে।
আরো পড়ুন ঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
তাহলে আপনার যদি এরকম সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই বুঝতে হবে যে আপনার পায়ে
এলার্জি রয়েছে। তাহলে আসুন এখন আপনি জানুন যে পায়ের এলার্জি দূর করার উপায়
সম্পর্কে,
- অ্যান্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট যেমন ডিফেনহাইড্রাইমাইন (বেনাড্রিল) চুলকানি উপশম করতে পারে তবে তন্দ্রা হওয়ার মতো অবাঞ্ছিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
- অ্যান্টিফাঙ্গাল স্প্রে, পাউডার এবং পায়ে প্রয়োগ করা ঔষধযুক্ত ক্রিম ক্রীড়াবিদদের পায়ের সংক্রমণের চিকিৎসা করে। গুরুতর বা পুনরাবৃত্ত ক্ষেত্রে, মৌখিক অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
- হাইড্রোকর্টিসোন এবং অন্যান্য টপিকাল স্টেরয়েড ক্রিম এবং মলম আক্রান্ত ত্বকে প্রয়োগ করা প্রদাহ এবং চুলকানি উপশম করে।
- ইমোলিয়েন্ট ময়েশ্চারাইজার যেমন ভ্যাসলিন শুষ্ক, চুলকানি ত্বককে হাইড্রেট করতে সাহায্য করে।
- অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস এবং ইমিউনোসপ্রেসেন্টের মতো ওষুধগুলি কিছু লোককে দীর্ঘস্থায়ী চুলকানিতে সাহায্য করতে পারে যখন অন্যান্য চিকিত্সা কাজ করে না।
- ত্বকের জ্বালা, অ্যালার্জেন বা শুষ্ক ত্বকের মতো ট্রিগারগুলি সনাক্ত করা এবং এড়িয়ে যাওয়া পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।
লেখকের শেষ কথা
সম্মানিত পাঠকগণ আমরা এই পোস্টে আলোচনা করলাম অতিরিক্ত এলার্জি হলে কি কি
করণীয় এবং আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে। সাধারণত এলার্জি একটি অনেক বড় সমস্যা
হয়ে দেখা যায় পরবর্তীতে যদি এটির চিকিৎসা শুরুতেই না করা হয়। তবে এলার্জি যে
সারা জীবনের জন্য নির্মূল হয়ে যায় এর কোন গ্যারান্টি নেই। এটি কিছুদিন
চিকিৎসা বা ওষুধ খাওয়ার ফলে ভালো থাকে কিন্তু পরবর্তীতে আবার তা দেখা দেয়।
তাই আমাদের সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরী। যখনই এলার্জির সমস্যা দেখা যাবে তখনই সকল
ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার জরুরী। আমরা এখানে যা যা আলোচনা করলাম যেমন অতিরিক্ত
এলার্জি হলে কি কি করনীয় এবং অন্যান্য আরো সকল কিছু সম্পূর্ণ গবেষণা লেখাপড়া
এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে লেখা হয়েছে। আমরা আশা করছি যে
এই পোস্ট যদি আপনি সম্পূর্ণ করতে পারেন এবং এ অনুযায়ী চলতে পারেন তাহলে অনেক
উপকৃত হবেন।
ট্রাজেডি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url