বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত - কিছু কথায় জেনে নিন

বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত আপনি যদি জেনে না থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্যই লেখা হয়েছে। আমরা অনেকেই বাগেরহাট ভ্রমণ করতে চায় কিন্তু আমরা আমরা অনেকেই বাগেরহাট সম্পর্কে বিস্তারিত জানি না।

বাগেরহাট-কিসের-জন্য-বিখ্যাত

যার কারণে আমাদের অনেক রকম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তাহলে আসুন আমরা এখন জানি বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত। তাছাড়াও আমরা এখানে আরো জানতে চলেছি যে বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যাক্তি সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ আপনি যা যা জানতে চাচ্ছেন

বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত

বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত আমরা এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে চলেছি এই পর্যায়ে। বাগেরহাট জেলা সম্পর্কে আমাদের অনেক কৌতুহল এবং প্রশ্ন থাকে যেমন বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত। বাগেরহাটে কি এমন রয়েছে যে বাগেরহাটকে মানুষ ভ্রমণের জন্য এত পছন্দ করে থাকে। আসুন আমরা এই সম্পর্কেই জানি যে বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত।
বাগেরহাট উত্তর পশ্চিমের খুলনা বিভাগের একটি অতি পরিচিত একটি জেলা। এই জেলায় বছরের সকল সময়ই মানুষের আনা গোনা থাকেই কারণ এই জেলার সৌন্দর্য এতটাই মনোমুগ্ধকর যে মানুষ এখানে ভ্রমণ না করে থাকতেই পারে না। বাগেরহাট খুলনা বিভাগের এ ক্যাটাগরির একটি জেলা। আমার মত আপনারও এই প্রশ্ন থাকতে পারে যে।

বাগেরহাটে আছে কি এমন যে মানুষ কেন এত বাগেরহাট ভ্রমণ করে। তাহলে আসুন আপনিও আমার সাথে জেনে কি আছে এই জেলায়। এই জেলায় রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক দর্শণীয় স্থান যা মানুষকে করে মুগ্ধ এবং আকৃষ্ট। তাছাটাও রয়েছে এখানে প্রাকৃতিক এবং মানুষের নিজের হাতে তৈরি অনেক দর্শবীয় স্থান।

তাছাড়া এই জেলায় রয়েছে প্রায় ১০ টির মত নদী যা এই জেলাকে করে সৌন্দর্যময়। এই জেলা বিখ্যাত কারণ এখানকার অসাধারণ ইতিহাস এবং ইতিহাস জয়ী কিছু ব্যাক্তির জন্য। এখানে আরো বিখ্যাত হয়েছে বাগেরহাটের অসাধারণ অসাধারণ খাবারের জন্য। আমরা এই পোস্টে বিস্তারিত জানব এই বিষয়গুলো নিয়ে। 

আমরা এই পর্যায়ে আলোচনা করলাম বাগেরহাট কি কারণে এত বিখ্যাত সেই বিষয় নিয়ে। তবে আসুন এখন আমরা আলোচনা করি বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যাক্তি নিয়ে।

বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যাক্তি

বাগেরহাট জেলা বিখ্যাত হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ হলোীই জেলার বিখ্যাত ব্যাক্তিবর্গ। এই জেলার রয়েছে অনেক জনপ্রিয় এবং ইতিহাস জয়ী ব্যাক্তি। এই জেলায় যে এত বিখ্যাত ব্যাক্তি মনে হয় যে অন্য জেলায় এত বিখ্যাত ব্যাক্তি খুজেই পাওয়াই যাবে না। তাহলে আসুন এখন জানি যে বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যাক্তি সম্পর্কে।

বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত ও জনপ্রিয় ব্যাক্তিবর্গ,
  • কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ
  • নীলিমা ইব্রাহিম
  • আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ
  • আবুল রফিক
  • স্বরোচিষ সরকার
  • আব্দুর রাজ্জাক
  • শহীদ রহিমউল্লাহ
রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহঃ রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত কবি এবং গীতিকার। তিনি ( ১৬ই অক্টবর ১৯৫৬ -  ২১শে জুব ১৯৯১) পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার মূল বাড়ি বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলা। তিনি খুব ছোট থেকেই সাহিত্যের উপর আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। তার বিখ্যাত লিখনি ্মানচিত্র, ফিরে চায় স্বর্ণ গ্রাম এবং বাতাসে লাশের গন্ধ। তার স্মৃতিতে মিঠাখালিতে গড়ে উঠেছে রুদ্র স্মৃতি সংসদ।

নীলিমা ইব্রাহিমঃ নীলিমা ইব্রাহিম একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী এবং সাহিত্যিক। তাছাড়াও তিনি ছিলেন একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। এছাড়াও তিনি ১৯৭৪-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি তিনি ১৯২১ সালে বাগেরহাটের জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম জমিদার প্রফুল্ল রায় চৌধুরী।

আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদঃ আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং সাহিত্যিক। তিনি বেশ কিছু জায়গায় কর্মরত ছিলেন কিন্তু পরে তিনি বুয়েটে যোগদান করেন। তার জন্ম ১৯৩৯ সালে কলকাতায় কিন্তু তার পৈতৃক নিবাস ছিল বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। তার অসাধারণ ক্বীর্তি হলো বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। যার জন্য তিনি সকল সাহিত্য পছন্দকারীর অন্তরে অমর হয়ে থাকবেন।

আবুল রফিকঃ আবুল রফিক বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবির মধ্যে একজন। তিনি বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলায় ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৪০ দশকের বাংলা কবিদের মধ্যে ছিলেন শ্রেষ্ঠ কবি। তার বিখ্যাত লিখনির মধ্যে রয়েছে বিরস সংলাপ, এখনও সময় আছে এবং রাজকাহিনী। তিনি তার কবিতার জন্য একুশে পদকে ভূষিত হন।

স্বরোচিষ সরকারঃ স্বরোচিষ সরকার একজন প্রমিত বাংলা ব্যাকরণের অন্যতম লেখক এবং সম্পাদিক। এছাড়া তিনি একজন বৈয়াকরণএবং আভিধানিক। তিনি ২০ অক্টোবর ১৯৫৯ বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।

আব্দুর রাজ্জাকঃ আব্দুর রাজ্জাক বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন প্রাক্তন খেলোয়াড় এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা লেগ স্প্রিনার। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সিলেক্টর প্যানেলের একজন নিয়মিত সদস্য। তিনিও বাগেরহাট জন্মগ্রহণ করেন।

শহীদ রহিমউল্লাহঃ শহীদ রহিমউল্লাহ একজন কৃষক ও নীল বিদ্রোহী নেতা। তিনি সুন্দরবন এলাকার বারইখালি অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বেশ পরিচিত এবং অনেক আস্থার লোক ছিলেন কৃষকদের মধ্যে। তিনি তার জীবনের সকল সময় আন্দোলনের মাঝে ছিলেন এবং তিনি শহিদ হয়ে যান।

আমরা এতক্ষণ আলোচনা করা বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যাক্তি সম্পর্কে। তবে এখন আমরা জানতে চলেছি বাগেরহাটের বিখ্যাত জেলা সম্পর্কে।

বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান

বাগেরহাট জেলা বিখ্যাত হওয়ার কারণগুলির মধ্যে অন্যতম কারণ হলো এই জেলার প্রাকৃতিক এবং ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান। আপনি যদি এখনও বাগেরহাট এর সৌন্দর্য দেখে না থাকেন তাহলে আমি বলব আপনি কিছুটা হতভাগা। আপনি এখন বলবেন আমি কেনো এই কথা বলছি সেই উত্তর নিতেই আপনাকে এই পোস্ট পুরোটাই মনযোগ সহকারে পড়ুন।
বাগেরহাট-কিসের-জন্য-বিখ্যাত (2)
বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম কিছু,
  • ষাট গম্বুজ মসজিদ
  • হযরত খানজাহান আলীর মাজার
  • সুন্দরবন
  • কোদলা মঠ
  • ছয় গম্বুজ মসজিদ
  • সিংগার মসজিদ
  • বাগেরহাট জাদুঘর
  • খাঞ্জেলী দিঘী
  • কটকা সমুদ্র সৈকত
ষাট গম্বুজ মসজিদঃ ষাট গম্বুজ মসজিদ বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক মসজিদ যা বাংলাদেশের দক্ষিণ পশিমে বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। এই মসজিদের নাম ষাট গম্বুজ হলেও আসলে এর গম্বুজ এর সংখ্যা ৮১ টি। ১৩৪৫ সাল থেকে ১৩৫৯ সাল পর্যন্ত এই মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এই ষাট গম্বুজ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা হযরত খানজাহান আলী। এই মসজিদ UNESCO ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।

হযরত খানজাহান আলীর মাজারঃ এই মাজারটি হযরত খানজাহান আলী অথবা উলুগ খান এর সম্মানে করা হয়েছিল। তিনি একজন বিখ্যাত সুফি এবং ইসলাম প্রচারক ছিলেন। ১৪০০ সালে এই মাজার নির্মাণ করে থাকে এবং এটি দেখতে ষাট গম্বুজ মসজিদের মত দেখতে। আপনি যদি এই মাজার পরিদর্শণ করতে চান তাহলে আমি আপনাকে বলব অগ্রহায়ন মাসে যাবেন কারণ এই সময় এখানে অরশ মোবারক পালিত হয়।
সুন্দরবনঃ সুন্দরবন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইউনেস্কো ঘোষিত ঐতিহাসিক স্থান। সুন্দরবন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব দ্বীপ। সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এর মধ্যে ৬৬ শতাংশ বাংলাদেশের মধ্যে এবং ৩৪ শতাংশ ভারতের অধীনে। সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে তিনটি বড় বড় নদী পদ্মা, মেঘনা এবং ব্রহ্মপুত্র। অধিকতর মানুষ বাগেরহাট আসলে সুন্দরবনকে তাদের প্রধান দর্শনীয় স্থান বলে নিশ্চিত করে নেয়।

কোদলা মঠঃ কোদলা মঠ একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক মঠ। এটি খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলায় কোদলা গ্রামে স্থাপিত। স্থানীয়রা এটিকে অযোধ্যায় বলে থাকে। কিন্তু এজন্য জায়গায় এবং বইয়ে এর নাম কোদলা মঠ ব্যবহার করা হয়। এটি সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত হয় এবং এটি হিন্দু ধর্মালম্বীদের সাথে জড়িত। এটি প্রাচীন হওয়ায় এর দেওয়ালে অনেক শিলালিপির কাজ দেখা যায।

ছয় গম্বুজ মসজিদঃ ছয় গম্বুজ মসজিদ সাধারণত ছয় গম্বুজ বিশিষ্ট হওয়ায় এর নাম ছয় গম্বুজ। এই মসজিদ মসজিদটি একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদ যা পঞ্চাদশ শতাব্দীতে স্থাপন করা হয়। এই মসজিদের ছয়টি কলাম ছিল যা পাথর দ্বারা নেমেছিল এবং অনেক মজবুত ছিল। এটি অনেক ঐতিহাসিক জিনিস বর্ণনা করে থাকে। এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয় ঠাকুরদিঘীর পাড়ে এবং এর মেহরাব বা হুজরা ঘন্টা আকৃতির।

সিংগার মসজিদঃ সিংগাইর মসজিদ প্রাচীন ও ঐতিহাসিক মসজিদ যা পঞ্চদশ শতাব্দীতে নির্মিত তবে এই মসজিদে তেমন কোন শিলালিপি নেই বলে এর সঠিক স্থাপনা কাল বলা অসম্ভব।  এই মসজিদ স্থাপিত খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় তাছাড়া এটি ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে বাগেরহাট খুলনা হাইওয়ের পাশে।  এটি অসম্ভব সুন্দর একটি মসজিদ এবং এটি অনেক ঐতিহাসিক বর্ণনা দিয়ে থাকে।

বাগেরহাট জাদুঘরঃ বাগেরহাট জাদুঘর ১৫০০ শতাব্দীর প্রাচীন খলিফাতাবাদশহরে স্থাপন করা হয়। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৫ সালে এই জাদুঘর করার প্রস্তাব দেন এবং ইউনেস্কো এর সহায়তায়  ১৯৯৫ সালে এটি স্থাপন করা হয়। ২০০১ সালে এই সুন্দর জাদুঘরটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।  এই জাদুঘরে অনেক প্রাচীন বস্তু পাওয়া যায়। এটি সকাল ১০ টা হতে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

খাঞ্জেলী দিঘীঃ একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক দিঘী। এটি বাগেরহাট জেলার হযরত খান জাহান আলীর মাজারের পেছনে অবস্থিত। এই দিঘির আয়তন প্রায় ২০০ বিঘা। এই দিঘী নিয়ে অনেক কুসংস্কার রয়েছে যেমন লোকেরা মনে করে এই দীঘিতে কোন কিছু মানত করলে তা সঠিকভাবে পাওয়া যায় এই জন্য এখানে অনেক মানুষের সমাগম থাকে। আপনিও চাইলে এখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

কটকা সমুদ্র সৈকতঃ কটকা সমুদ্র সৈকত বাগেরহাট জেলা কয়রা উপজেলা্র কয়রা ইউনিয়নে অবস্থিত এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনের পূর্ব পাশে অবস্থিত। এই কটকা সমুদ্র সৈকতে যেতে হলে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে এক কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয় কিন্তু এখানে ভয়ের বিষয় হচ্ছে কটকা সমাজের সৈকতের যাওয়ার যে রাস্তা সে রাস্তা তে অনেক সময় বন্য পশু দেখা যায়।

বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা

মুক্তিযোদ্ধা এমন একটি শব্দ যার সাথে এমন আবেগি সম্পর্ক যা আর কোনো কিছুর সাথে নেয়। আমরা যেই বাগেরহাটের ব্যাক্তি এবং সৌন্দর্য নিয়ে এত কথা বললাম সেই বাগেরহাট জেলা মুক্তিযোদ্ধা নিয়েও অনেক বিখ্যাত। এই জেলায় অসংখ্য সাহসী মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে কিন্তু আমরা এখানে আলোচনা করব খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে।

বাগেরহাটের বিখ্যাত খেতাব পাওয়া সাহসী মুক্তিযোদ্ধারা,
  • লিয়াকত আলী খান
  • খিজির আলী
  • মোহাম্মদ হোসেন
লিয়াকত আলী খানঃ লিয়াকত আলী খান একজন পাইলট ছিলেন এবং তিনি বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে কর্মরত ছিলেন মে মাসে বাবার অসুস্থতার কথা জানিয়ে দেশে এসে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। পরে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অ্যাডজুটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্ম হয়েছিল বাগেরহাট জেলার বাগেরহাট পৌরসভায় তবে জন্ম সাল অজানা সবার।

খিজির আলীঃ খিজির আলী একজন বীর বিক্রম খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং পেশায় একজন মেকানিক ছিলেন। তিনি ছিলেন অসীম সাহসের অধিকারী যেটি তার মুক্তিযোদ্ধের অবদান দেখলেই বোঝা যায়। তিনি ৯ নাম্বার সেক্টরে যুদ্ধ করেন। তার হাত পায় ৪০ জন রাজাকার এবং ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়।

মোহাম্মদ হোসেনঃ মোহাম্মদ হোসেন একজন বীর প্রতীক খেলাব প্রাপ্ত সাহসী মুক্তিযোদ্ধা। তিনি পেশায় একজন ইপিয়ার সৈনিক ছিলেন এবং পরবর্তীতে তিনি বিডিআর সৈনিক ছিলেন তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান এর অধীনে যুদ্ধ করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতার জন্য তাকে বীর প্রতীক হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়।

বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত খাবার

আমরা এতক্ষণ অনেক কারণ দেখলাম বাগেরহাট বিখ্যাত হওয়ার। কিন্তু আমরা জানি যে কোনো জায়গা বিখ্যাত হওয়ার জন্য ঐ এলাকার খাবার কতটা প্রভাব ফেলে। আমরা বাঙ্গালী হওয়ার আমাদের খাবারের ওপরে কতটা টান আমরা তা ভালো করেই জানি। তাই আসুন এখন আমরা জানি যে বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত এবং ঐতিহ্যবাহী খাবার সম্পর্কে।

আমরা বাগেরহাট বিখ্যাত হওয়ার অনেক কারন দেখলাম যেমন বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যাক্তি, বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান আরো অনেক। কিন্তু খাবার যদি ঐ শহরের ভালো না হয় তাহলে কিন্তু অতোটা বিখ্যাত হওয়া যায় না। আমরা জানি বাগেরহাট সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা তাই এখানে খাবার অনেক রকম ভিন্নতা রয়েছে। আমরা এখানকার বিখ্যাত তিনটি খাবার নিয়ে কথা বলব।

চুইঝালঃ চুইঝাল একটি বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত এবং ঐতিহ্যবাহী খাবার। যারা মাংস্য প্রেমি মানুষ তাদের জন্য চুইঝাল অনেক প্রিয় খাবার। চুইঝাল গরুর মাংস্য এবং খাসির মাংস্য উভয়ই রান্না করা যায়। বাগেরহাটের এই বিখ্যাত চুইঝাল খেতে মানুষ অনেক দুরদুরান্ত এসে থাকে। ব্যাক্তিগতভাবে বলতে গেলে আমি নিজেও বাগেরহাটের চুইঝালের বিশাল ভক্ত।

সুপারিঃ সুপারি এটি গ্রাম অঞ্চলে অনেক পরিচিত এবং প্রচুর ব্যবহার যোগ্য একটি খাবার। যারা পান খেয়ে থাকেন তারা যানেন যে সুপারি ছাড়া পানের কোনো মজা নেই। বাগেরহাট সমুদ্র এলাকা হওয়ায় এখানে প্রচুর সুপারির গাছ দেখা যায়।

চিংড়ি মাছঃ চিংড়ি মাছ খুবই সুস্বাদু এবং বিখ্যাত একটি খাবার। যদিও জীববিজ্ঞানের ভাষায় চিংড়ি কোনো মাছ নয় বরং এটি একজাতীয় পোকা কারণ চিংড়ি ARTHOPODA গ্রুপের প্রাণী। চিংড়ি মাছের অনেক দাম এবং অনেক চাহিদা রয়েছে আমাদের দেশে। আর এই চিংড়ি মাছ সবচেয়ে বেশি এবং ভালো পাওয়া যায় বাগেরহাট জেলায়।

বাগেরহাট জেলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

বাগেরহাটেরও কিছু ইতিহাস পাওয়া যায়। সেইগুলো আমরা এখানে আলোচনা করব কারণ একটি জেলার সবকিছু নির্ভর করে তার ইতিহাসের উপরে। আসলে বাগেরহাটের বাগেরহাট নামকরণ কে করছে এটা জানা যায় নাই। ধারনা করা হয় এই এলাকায় আগে প্রচুর বাঘের উপদ্রব ছিলো বলে এর নাম রাখা হয় বাগেরহাট।
বাগেরহাট-জেলার-সংক্ষিপ্ত-ইতিহাস
বাগেরহাটে প্রথম বসতি স্থাপন করে অনার্য শ্রেণীর মানুষ। এদের মধ্যে রয়েছে ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চল হতে আসা অস্ট্রিক ও দ্রাবিড় এবং মঙ্গোলীয় আলপাইন প্রভৃতি। অনার্য শ্রেণীভূক্ত নমশূদ্র সম্প্রদায়ের মানুষ ও বাগেরহাটে প্রচুর বাস করে। এদের পূর্ব নাম চন্ডাল। এরা বরেন্দ্র অঞ্চল হতে এসে এখানে বসবাস শুরু করে। 

তাছাড়া বাগেরহাটে এক শ্রেণীর মৎস্য শিকারী বা জেলে বসবাস করে যাদের আদি পুরুষ নিগ্রোয়েড। এরা উপমহাদেশের সবচেয়ে আদিম অধিবাসী। আর্য-অনার্যের শোণিত ধারাই এ অঞ্চলের অধিবাসীদের মধ্যে ।আসলে পূজারী অনার্যগণ কৌমধর্ম অনুসরণ করতো। শক্তি পূজারী আর্যরা নিয়ে আসে বৈদিক ধর্ম।
বাগেরহাটের অতি প্রাচীন স্থান পানিঘাটে প্রাপ্ত কষ্টি পাথরের অষ্টাদশ ভূজা দেবীমূর্তি, মরগা খালের তীরে খানজাহান আলী এর পাথর ভর্তি জাহাজ ভিড়বার স্থান জাহাজঘাটায় মাটিতে গ্রোথিত পাথরে উৎকীর্ণ অষ্টাদশ ভূজা মহিষ মর্দিনী দেবীমূর্তি, চিতলমারী উপজেলাধীন খরমখালি গ্রামে প্রাপ্ত কৃষ্ণ প্রস্তরের বিষ্ণু মূর্তি ইত্যাদি নিদর্শন এখানে হিন্দু সভ্যতা বিকাশের পরিচয় বহন করে।

১৪৫০ খ্রিঃ খানজাহান আলী খাঞ্জেলী দীঘি খনন করান। এ সময় অনন্য সাধারণ ধ্যাণী বৌদ্ধমূর্তি পাওয়া যায়। ১৯৭১ সালে বৌদ্ধ পুরোহিত বিশুদ্ধানন্দ মহাথেরো পাল আমলে নির্মিত ঐ বৌদ্ধমূর্তিটি কমলাপুর বৌদ্ধ বিহারে সংস্থাপন করেন। এই অঞ্চলে যে বোদ্ধ ধর্মও ছিলো এটী তার প্রমাণ বহন করে। এই হলো বাগেরহাটের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

বাগেরহাট যাওয়ার উপায়

আমরা এতক্ষণ বাগেরহাট বিখ্যাত হওয়ার অনেক কারণ আলোচনা করলাম। আপআর নিশ্চয় এসব জেনে আপনারও বাগেরহাট যেতে ইচ্ছা করছে তাহলে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে বাগেরহাট যাওয়ার উপায় কি ? আসুন আমরা এখন জেনে নেয় যে বাগেরহাট যাব কিভাবে।

ঢাকা থেকে বাগেরহাটঃ ঢাকা থেকে বাগেরহাট যাওয়ার অনেক মাধ্যম রয়েছে যেমন বাস, ট্রেন এবং লঞ্চ ইত্যাদি। ঢাকা থেকে বাগের হাটের জন্য এসি এবং নন এসিন অনেক বাস ছেড়ে যায় যেমন হানিফ, শ্যামলি, ঈগল এবং শাকুরা ইত্যাদি যার ভাড়া লাগতে পারে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত বাস ভেদে।তাছাড়াও অনেক লোকাল বাস চলাচল করে থাকে।

ট্রেন মধ্যবিত্তদের জন্য একটি আস্থার নাম কারণ ট্রেনের খরচ কিছুটা কম। তাই সবাই ট্রেন কেই বেশি ভ্রমণের জন্য বেছে থাকে। ঢাকা কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রথমে যেতে হবে খুলনা স্টেশন তারপর আসতে হবে বাগেরহাটে। কোয়ালিটি ভেদে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা লাগতে পারে ট্রেনে। আপনারা চাইলে অফলাইন এবং অনলাইনে বাংলাদেশ রেলওয়ে ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কেটে নিতে পারবেন।

নদীর সাথে আপনি সফর করতে চান তাহলে আপনাকে লঞ্চে ভ্রমণ করতে হবে। প্রতিদিন ঢাকা থেকে বাগেরহাটের জন্য লঞ্চ ছেড়ে যায়। কোয়ালিটি উপর বিবেচনা করে ভাড়া হয়ে থাকে যেমন ২৫০ থাকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।

লেখকের কিছু কথা

আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত সম্পর্কে। বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত তা নিয়ে আলোচনা করতে আমরা আরো অনেক কিছু আলোচনা করেছি যেমন বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যাক্তি, বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান, এবং বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান আরও অনেক কিছু নিয়ে। আমরা আশা করছি যে আপনার এই সকল বিষয় নিয়ে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। তবুও আপনারা ভ্রমণের সময় সচেতন হয়ে ভ্রমণ করবেন।





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রাজেডি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url