গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত - জেনে নিন কিছু কথায়

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত আপনি যদি জেনে না থাকেন তাহলে এই পোস্ট থেকে আপনি জেনে নিতে পারেন। কেননা একজন গর্ভবতী মেয়ের জন্য এই সময় অনেক মূল্যবান এবং সংবেদনশীল সময়। তাই এই সময় জানা উচিত কোন খাবার উপকারি এবং অপকারি।
গর্ভাবস্থায়-কি-কি-ফল-খাওয়া-উচিত
গর্ভাবস্থা যেহেতু অনেক সংবেদনশীল তাই আসুন আমরা জেনে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উপকারি এবং অপকারি হয়ে থাকে। এছাড়াও আমরা এই পোস্টে আমরা আরো জানব যে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া ঠিক না।

পোস্ট সূচিপত্রঃ আপনি যা যা জানতে চাচ্ছেন

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত আমরা যারা জানি না আসুন আমরা তাহলে এই পর্যায়ে জেনে নেয়।
ফল আমরা যাকে ইংরেজিতে বলে থাকি FRUITS যা আমাদের জন্য অনেকটাই উপকারি হয়ে থাকে। আবার কিছু কিছু ফল আছে যা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আমাদের কিছুটা ক্ষতিটাও করে থাকে। যাই হোক আমরা পোস্টে জানিব গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থা অনেক মূল্যবান এবং সংবেদনশীল হয়ে থাকে একটি মেয়ের জন্য তাই এই সময় প্রতিট গর্ভবতী মাকে সব খাবারের পুষ্টিগুন বিবেচনা করে খাওয়ানো উচিত। ফল সাধারণত একজন মানুষের জন্য খুবই উপকারি কিন্তু এটি যখন আমরা কোনো গর্ভবতী মাকে খাওয়াবো তখন একটু জেনে শুনে খাওয়ানো উচিত।

আমরা এই পোস্টে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চলেছি এই বিষয় নিয়েই যে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত এবং কোন কোন ফল খাওয়ানো উচিত নয় এমন ৫ টি ফল নিয়ে। আমরা প্রথমে আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়ানো যায় এই বিষয় নিয়ে। যে ফলগুলো নিয়ে খাওয়া যাবে তা হলো কলা, আপেল, আম, কাঁঠাল, মাল্টা এবং চেরি ফল।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া ঠিক না

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া ঠিক না আপনারা জানেন না তাহলে আসুন এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের তা জানি দেয়। ফল এটি একটি অনেক পরিচিত এবং প্রয়োজনীয় শব্দ আমাদের মানব সমাজের জন্য। এটি আমরা প্রতিনিয়তই খেয়ে থাকি কারণ এটি আমাদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় এবং উপকারি একটি উপাদান।

আমাদের বাংলাদেশে প্রায় ১৩০ রকমের ফল পাওয়া যায় আবার কোনো কোনো সূত্র মতে ১৫২ টি ও উল্লেখ আছে বলা জানা যায়। তাছাড়াও বর্হিবিশ্বে যে কত রকমের ফল রয়েছে তা ধারণার বাহিরে যা কম বেশি আমাদের জন্যই সবাটায় উপকারি। কিন্তু এটি আমাদের নরমাল মানুষের জন্য উপকারি। এই ফলগুলোর মধ্যে এমন কয়েকটি ফল নিয়ে আলোচনা করব।

যা গর্ভাবস্থায় উপকারের চেয়ে কিছুটা ক্ষতিটায় এক্টু বেশি ডেকে আনে। তাই আমরা এই পোস্টে আপনাদের জানবো যে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া ঠিক না। কারণ আমরা গর্ভাবস্থায় এসব ফল ফল যদি আমরা না জেনে খাওয়ায় তাহলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাহলে আসুন জেনে নিন এই পোস্টের মাধ্যমে যে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া ঠিক না।

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা একটি খুবই জনপ্রিয় এবং উপকারি ফল। এটি খুবই উপকারি এবং সূলভ মূল্যের হওয়ার কারণে আমরা সকলেই এই ফলকে অনেক পছন্দ করে থাকি। কলা সূলভ মূল্যের হওয়ার সাথে এটি সকল জায়গাতেই পাওয়া যায়। কলা একটি অ্যান্টিঅক্সিজেন সমৃদ্ধ ফল যা আমাদের দেহের বিভিন্ন রোগবালাই এর সাথে লড়ায় করে থাকে। 

কলা তো সকল মানুষের জন্যই উপকারি কিন্তু এটি কি গর্ভাবস্থায় কতটা উপকারি এবং এটি কতটা খাওয়া গ্রহনযোগ্য আমাদের অনেকের মনেই এই প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। তাহলে আসুন আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে জেনে নেয় যে গর্ভাবস্থায় কল খাওয়ার উপকারিতা আছে কি না থাকলেও তার উপকারিতা কতটুকু রয়েছে।

কলার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বলতে গেলে বলা যায় কলা তে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং প্রচুর পরিমানে পানি। এছাড়াও কলা পুষ্টিগুনের অভাব নেই বললেই চলে। এখন আমরা জানি যে কলা গর্ভাবস্থায় আসলে খাওয়া যাবে কি না হ্যাঁ, কলা আসলেই গর্ভাবস্থায় খাওয়া যায় এবং এর উপকারিতাও পাওয়া যায়।

শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত রাখতেঃ আমরা কম বেশি সকলেই জানি যে গর্ভাবস্থায় শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মাত্রা কমে যায় এবং এই মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে শরীরে বিভিন্ন ছোট খাটো রোগ দেখা যায়। শরীরের এই রোগ বালাই থেকে দূরে থাকতে আমাদের গর্ভবতী মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে কলা খাওয়ানো উচিত কারণ কলাতে রয়েছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ আমরা সকলে জানি যে গর্ভাবস্থায় প্রচুর হজমের সমস্যা দেখা দেয় এবং সে সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দেখা দেয়। গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা গুলো অনেক বড় আকার ধারণ করে। কারণ এই অবস্থায় এমনিতেই গর্ভবতী মা কোন খাবার খেতে পারে না তারপর আবার এই সমস্যার জন্য অনেক ভোগান্তিতে ভুগতে হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গর্ভবতী মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে কলা খাওয়ানো উচিত কারণ কলা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং হজমের সমস্যা দূর করে থাকে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ গর্ভাবস্থায় রক্তচাপের প্রচুর সমস্যা দেখা দেয়। এটি কখনো কখনো উপরে এবং নিচে নামতে থাকে। একজন গর্ভবতী মায়ের যদি রক্তচাপ ঠিক না থাকে তাহলে অনেক বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের উচিত এই অবস্থায় গর্ভবতীর মাকে স্বাভাবিক রক্তচাপে রাখা। এ অবস্থায় রক্তচাপ সাধারণ মাত্রায় রাখতে হলে নিয়মত পর্যাপ্ত পরিমাণে কলা খাওয়ানো উচিত। কারণ কলাতে রয়েছে ফসফরাস যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

গ্যাসের সমস্যার জন্যঃ কলা এমন একটি উপকারী এবং প্রয়োজনীয় ফল যার ভেতরে প্রাকৃতিকভাবেই প্রচুর এন্টাসিড হয়েছে। এটি আমাদের শরীরের গ্যাসের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে। আমরা সকলে জানি গর্ভাবস্থায় প্রচুর গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়াও এ সময় হজমের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় সেই সাথে বুক এবং পেট অনেক জ্বালাপোড়া করে।

এই সকল সমস্যা অনেক বড় আকার ধারণ করতে পারে। তাই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়ম মত কলা খাওয়া উচিত কারণ কলাতে রয়েছে প্রচুর পানি এবং এন্টাসিড। যা গর্ভবতী মাকে এসব গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে এবং হজমেও ভালো কাজ করে।

মর্নিং সিকনেস দূর করতেঃ গর্ভাবস্থায় প্রচুর মর্নিং সিকনেস এর সমস্যা দেখা দেয়। মর্নিং সিকনেস হল এমন একটি সমস্যা যা প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলার হয়ে থাকে। মর্নিং সিকনেস হল নিয়মিত বমি বমি এবং বমি হওয়ার সমস্যা। এই সমস্যা থেকে খুব দ্রুত মুক্তি দিয়ে থাকে কলা কারণ কলাতে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং ভিটামিন সি।

গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায়ী আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এই পর্যায়ে আমরা বিস্তারিত জানতে চলেছি। আমরা সকলে জানি আম একটি অনেক সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল। এটি বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে বেশি পাওয়া যায় তবে। বাংলাদেশ ফল গবেষণা কেন্দ্র এমন কিছু আমের আবিস্কার করেছে যা সারা বছর পাওয়া যায়। বাংলাদেশে অনেক প্রকারের আম পাওয়া যায় সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।

আমাদের কম বেশি সকলের মনে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায় তা হল গর্ভাবস্থায় আসলে কি আম খাওয়ার কোন উপকারিতা আছে বা আম খাওয়ার কি কোন গ্রহণযোগ্যতা আছে। আম যেহেতু অনেক পুষ্টিগুণ সমূদ্ধ ফল তাই আমাদের সবার জানা আগ্রহ থাকে যে অবস্থায় এই ফল খাওয়ানো হলে একজন গর্ভবতী মায়ের কতটা উপকার হয়। আমরা এই বিষয় নিয়ে এ পর্যায়ে আলোচনা করতে চলেছি।

আমে বিভিন্ন রকমের পুষ্টিগুণ রয়েছে যেমন আমে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এ সকল পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের এবং পরবর্তী মায়েদের প্রচুর উপকার করে থাকে যেমন,

চোখের দৃষ্টিকোণ ঠিক রাখতেঃ আমরা ইতিমধ্যে জানলাম যে আমি ভিটামিন এ থাকে। আমরা আরো জানি যে ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি এবং রাতকানার মত সমস্যা থেকে মুক্তি থাকে। গর্ভবতী মাকে যদি নিয়ম মত আম খাওয়ানো হয় তাহলে বাচ্চার রাতকানা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। সেই সাথে বাচ্চা এবং বাচ্চার মায়ের চোখে দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়।

শরীরের ফ্যাকাসে ভাব দূর করণেঃ আমরা সকলে জানি যে গর্ভাবস্থায় শরীর ফ্যাঁকাসে এবং উষ্ক শুষ্ক হয়ে যায়। এটি একটি গর্ভাবতী মায়ের জন্য নিয়মিত একটি সমস্যা যা একটি বিরক্তকর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এই সমস্যা দূর করণে একজন গর্ভবতী মাকে নিয়মত পর্যাপ্ত পরিমানে আম খাওয়ানো উচিত। কারণ আমে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি যা এসব কাজে বেশ কার্যকারী।

বাচ্চার ভ্রুণ বিকাশেঃ মায়ের পেটেই বাচ্চা বেড়ে উঠে আমরা এটা সকলেই জানি এবং এটাই হয়ে থাকে। বাচ্চার বিকাশের জন্য যে পুষ্টিগুন দরকার তা বাচ্চা তার মায়ের কাছে থেকেই সংগ্রহ করে থাকে। বাচ্চার সঠিক ভ্রূণ বিকশের জন্য বাচ্চার মাকে সঠিক মাত্রায় আম খাওয়ানো উচিত। কারণ আমে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যা বাচ্চার ভ্রুণ বিকাশে সহায়তা করে।

আমরা এতক্ষণ জানলাম যে গর্ভাবস্থায় আম খেলে কি আসলেই এর উপকারিতা পাওয়া যায় কিনা তার সম্পর্কে। আমরাদেখলাম গর্ভাবস্থায় আম খেলে বেশ কিছু উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে আম খাওয়া গর্ভাবস্থায় ঠিক নয় এতে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় আপেল খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় আপেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা এই পর্যায়ে জানতে চলেছি। আপেল একটি বহু পরিচিত এবং অনেক উপকারি ফল। সারা বছর বাজারে এই ফল পাওয়া যায়। আপেল বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে যেমন লাল আপেল, সবুজ আপেল এবং কালো আপেল। তবে কালো আপেল অনেক দামি এবং সকল জায়গায় এটি পাওয়া যায় না।
গর্ভাবস্থায়-কি-কি-ফল-খাওয়া-উচিত (2)
আপেল অনেক উপকারি এবং সুস্বাদু হওয়ার কারণে আমাদের ভেতরে একটা কৌতূহল থাকে যে এই ফল কি গর্ভাবস্থায় কোনো সুফল নিয়ে আসে না কোনো ক্ষতি করে থাকে। আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে সেই বিষয় জানার চেষ্টা করব। আপেলে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান যেমন, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও ই, গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, শর্করা, অ্যান্টঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি। 

শক্তি যোগাতেঃ গর্ভাবস্থা এমন একটি সময় যেই সময় বিভিন্ন কারনে শরীরে শক্তি কমে যেতে থাকে সেই সাথে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। ফলে বাচ্চার ভ্রুণের বিকাশের কিছুটা ক্ষতি হতে থাকে। সেই জন্য বাচ্চার মাকে নিয়ম মত সঠিক পরিমানে আপেল খাওয়ানো উচিত কারণ আপেলে রয়েছে গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং শর্করা যা শরীরে শক্তি সঞ্চালন করে থাকে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেঃ একজন বাচ্চা তার মায়ের উদর থেকেই তার স্মৃতিশক্তি এবং ভ্রুণের বিকাশ হয়। যেহেতু বাচ্চা তার মায়ের মাধ্যমে পুষ্টিগুন সংগ্রহ করে থাকে তাই বাচ্চার মাকে সঠিক মাত্রায় আপেল সেবন করানো উচিত। কারণ আপেলে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন ই বাচ্চার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেঃ আপেলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টঅক্সিডেন্ট জাতীয় পুষ্টি উপাদান যার ফলে গর্ভাবস্থায় দেখা বিভিন্ন রোগ বালাই এর সাথে লড়াই করে এবং শরীরকে রোগ মুক্ত। ভিটামিন সি থাকার কারণে শরীর ফ্যাঁকাসে হওইয়া থেকে মুক্ত থাকে। 

আমরা বেশ কিছু উপকারিতার কথা দেখলাম এতে বোঝায় যায় যে গর্ভাবস্থায় আপেল খাওয়ার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এবং এর উপকারিতাও রয়েছে। তবে এর উপকারিতা রয়েছে বলে আবার অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয় এতে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় মাল্টা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় মাল্টা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা এই পর্যায়ে জানব। মাল্টা একটি সুস্বাদু এবং অনেক পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ। মাল্টা অনেক উপকারি হওয়ায় আমরা অনেক বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন করে থাকি যে গগর্ভাবস্থায় মাল্টা খাওয়ার কি কোনো উপকারিতা রয়েছে কি। তাহলে আসুন আমরা এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়।
  • মাল্টাতে ভিটামিন সি থাকায় গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন রকমের ঘা এবং প্রদাহ থেকে মুক্ত রাখে। তাছাড়াও শরীর ফ্যাঁকাসে হওয়া থেকে দূরে রাখে।
  • মাল্টা গর্ভবতী মা এর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে কারণ মাল্টাতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টঅক্সিডেন্ট। অ্যান্টঅক্সিডেন্ট মানুষের বিভিন্ন রোগের সাথে লড়াই করে।
  • মাল্টা তে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম থাকে যা বাচ্চা মা এর হাড় গুলোকে শক্ত করে। কারণ গর্ভাবস্থায় মায়েদের হাড়গুলো একটু ভঙ্গুর হয়ে যায়। তাছাড়া বাচ্চার হাড়গুলোকে শক্ত ও মজবুত হতে সাহাজ্য করে থাকে।
  • মাল্টাতে পটাশিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে। যার ফলে গর্ভবতী মায়ের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে এবং বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে সাহাজ্য করে।
আমরা উপরের এতটুকু আলোচনা দেখে বোঝলাম যে গর্ভাবস্থায় মাল্টা খাওয়ার উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে মনে রাখতে হবে যে অতিরিক্ত মাল্টা খাওয়া যাবে যাবে না কারণ এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি রয়েছে। ভিটামিন সি এর অতিরিক্ত ব্যবহারে শরীরে ঘা দেখা দিতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা

কাঁঠাল অনেক স্বাদের এবং পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ সম্পন্ন একটি খাবার। এটি আকারে অনেক বড় হয়ে থাকে। কাঁঠাল হলো আমাদের বাংলাদেশের জাতীয় ফল। কাঠাল আকারে যেমন বড় তেমনি তার পুষ্টিগ্ন অনেক বেশি। এ পুষ্টিগুণ এতটাই বেশি যে একটি পোস্টের মাধ্যমে তার ব্যাখ্যা করে শেষ করা অসম্ভব। এত পুষ্টিগুন থাকার কারণে আমরা সকলে জানতে চাই এটি গর্ভাবস্থায় খাওয়ানো যাবে কিনা।

কাঁঠালের পুষ্টি উপাদান এর মধ্যে রয়েছে থায়ামিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন এবং ফোলেট। এত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল গর্ভাবস্থায় খাওয়ানো যাবে কিনা এবং এর উপকারিতা এই বিষয় নিয়ে আমরা এ পর্যায়ে আলোচনা করব।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনেঃ আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি যে কাঁঠালের রয়েছে পটাশিয়াম এবং ফসফরাস। এই কাঁঠাল এবং ফসফরাস আমাদের দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ একটু এলোমেলো দেখা যায়। সেই কারণে গর্ভাবস্থায় সঠিক পরিমাণে কাঁঠাল খাওয়ানো উচিত কারণ এর ভেতরে থাকা ফসফরাসের পটাশিয়াম গর্ভবতী মায়ের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

পেটের স্বস্তির জন্যঃ আমরা সকলে জানি যে গর্ভাবস্থায় পেটে অনেক ব্যথা ও যন্ত্রণা হয়।  এই ব্যথা ও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে গর্ভবতী মাকে সঠিক নিয়ম মত কাঁঠাল খাওয়ানো উচিত কারণ কাঁঠালের রসে রয়েছে ৭০% পানি এতে গর্ভবতী মায়ের পেটের জ্বালাপোড়া কমে।

মানসিক চাপ কমাতেঃ একজন গর্ভবতী মাকে প্রায় দশ মাসের মত নিজের বাচ্চাকে পেটে করে রাখতে হয়। এই দশ মাস একজন গর্ভবতী মা যেরকম কষ্ট সহ্য করে সেরকম কষ্ট আর কোথাও পাওয়া যায় না। এই সময় পেটে এবং সারা শরীরে যে রকম যন্ত্রণা ও অস্বস্তির ভাব দেখা যায় এতে একজন গর্ভবতী মায়ের মনোবল ধ্বংস হয়ে যায়।

এই মনোবল ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কারণে মানুষের চাপে পড়ে যায়। এই মানসিক চাপে পড়ার কারণে পেটের বাচ্চা এবং মায়ের অনেক ক্ষতি হয়।  এই মানসিক চাঁদ থেকে রক্ষা পেতে গর্ভবতী মাকে সঠিক নিয়ম মত কাঁঠাল খাওয়ানো উচিত কারণ কাঁঠালের রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে  ফোলেট, থায়ামিন এবং কাঁঠালের থাকা বিভিন্ন প্রোটিনের কারণে গর্ভবতী মায়ের মানসিক চাপকে কমিয়ে দেয়।

আমরা উপরের বেশ কিছু উপকারিতা দেখে বুঝতে পারলাম যে গর্ভাবস্থায় কাঁঠালের উপকারিতা কম নয়।  তবে আবারো বলে রাখি যে কাঁঠাল একটু  আঠা জাতীয় ফল তাই  এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে নইলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি  হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

গর্ভাবস্থায় চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করবো আমরা এই পর্যায়ে। চেরি ফল অনেক মিষ্টি স্বাদের এবং অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। এটি দেখতে কিছুটা ছোট এবং গাড়ো লাল রঙের হয়ে থাকে। চেরি ফলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা এই মুহূর্তে সম্ভব নয় তবে গর্ভাবস্থায় এর উপকারিতা আছে কিনা এই বিষয় নিয়ে আমরা এখন আলোচনা করব।

খিঁচুনি রোধেঃ বাচ্চা প্রসব কালে কম বেশি সকল মায়েদের খিচুনির সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যাটি এতটাই গুরুতর যে এই খিচুনি অতিরিক্ত হয়ে গেলে একজন মা মারা যেতে পারে। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে সঠিক পরিমাণ মতো বাচ্চার মাকে চেরি ফল খাওয়ানো উচিত কারণ এই যেই ফলে রয়েছে ফলিক অ্যাসিড।
গর্ভাবস্থায়-চেরি-ফল-খাওয়ার-উপকারিতা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেঃ গর্ভবতী মহিলার জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রচুর পরিমাণ প্রয়োজন কারণ এ সময় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়াও বাচ্চার ভ্রুণবিকাশে অনেক সহায়তা করে থাকে এই এন্টিঅক্সিডেন্ট। এন্টিঅক্সিডেন্টের মাধ্যমে বাচ্চার মা বিভিন্ন প্রকার রোগ বালাই থেকে দূরে থাকে।

ঘুমের সমস্যা থেকে মুক্ত হতেঃ গর্ভ অবস্থায় আরেকটি যে বড় সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় সেটি হল ঘুমের অভাব। এই ঘুমের অভাবের কারণে বাচ্চার মা মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙ্গে পড়ে যায়। তাই এই ঘুমের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক নিয়ম অনুযায়ী পরিমাণ মতো চেরি ফল খাওয়ানো উচিত কারণে এতে ঘুমের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।

এতক্ষণ আমরা গর্ভাবস্থায় চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করলাম। তবে মনে রাখা দরকার অনেক মিষ্টি হয় এই সময় যেই ফল খেতে ভালো নাও লাগতে পারে তবে আপনি যদি খেতে পারেন তাহলে আপনি অনেক উপকার পাবেন। উপকার পাওয়ার আশায় অতিরিক্ত এই ফল খাবেন না এতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গর্ভাবস্থায় যে কয়েকটি ফল খাওয়া উচিত নয়

আমরা এই পর্যায়ে জানব গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া ঠিক না। ফল আমাদের সকলের জন্যই উপকারি হলেও গর্ভাবস্থায় কিছু কিছু ফল এড়িয়ে যাওয়ায় উত্তম। সেই ফল গুলো যদি উপকারিও হয়ে থাকে থাকে তাও এড়িয়ে চলতে হবে কারণ এই ফলগুলোর দ্বারা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

খেজুরঃ খেজুর একটি অনেক সুস্বাদু এবং  উপকারি ফল।  তবে এটি সাধারণ মানুষের জন্য উপকারী হল গর্ভবতী  মেয়েদের জন্য মোটেও তেমন উপকারী নয়। কেননা খেজুর অনেক মিষ্টি  হওয়ায়  গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়া যায় না তাছাড়া ও এই সময় এটি খাওয়ার ফলে শরীরের ভেতরের গরম কে বাড়িয়ে দেয় যার ফলে প্রসবের সময় সমস্যা দেখা দেয়।

আনারসঃ আনারস একটি টক জাতীয় ফল।  সাধারণত এই ফলের ও অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে কিন্তু এটি গর্ভাবস্থায় একদমই উপকারী নয় বরং এটি গর্ভবতী মায়ের জন্য অনেকটা ক্ষতিকর হয়ে থাকে। আনারস খেলে পেটের ব্যথা বৃদ্ধি করে এবং এটি ডায়রিয়ারাও কারণ হতে পারে।
পেপেঃ পেঁপে একটি অনেক স্বাদের এবং  পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল।  তবে এই ফলও গর্ভাবস্থায় বেশ কিছুটা  ক্ষতি করে থাকে   পেঁপেতে রয়েছে ল্যাটিক্স জাতীয় উপাদান যা গর্ভপাতের জন্য দায়ী তাছাড়া এর ফলে সময়ের আগেই গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও পেটে বাচ্চার বিকাশের ক্ষেত্রেও কিছুটা ক্ষতিকর।

ড্রাগনফলঃ ড্রাগন ফল  একটি সুস্বাদু ফল। এটি গাঢ় লাল এবং হালকা সাদা বর্ণের ও হয়ে থাকে। এই  ফলটি ব্যাপক উপকারী হওয়া সত্ত্বেও গর্ভবতী  মেয়ের জন্য বেশ  কিছু ক্ষতি ডেকে আনে।  কারণ এই ফলে বেশ কিছু এলার্জি রয়েছে যার ফলে গর্ভবতী মায়ের শরীর প্রচন্ড চুলকানি এবং ঘা এর মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই ড্রাগন ফল থেকে দূরে থাকায় উত্তম।

এতক্ষন আমরা কয়েকটি ফল নিয়ে আলোচনা করলাম যে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত নয়। আশা করছি আপনাদের এই বিষয়ের উপর সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন।

লেখকের কিছু মন্তব্য

আমরা এই পোস্টে এতক্ষণ আলোচনা করেছি  গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত এবং আমরা এই পোস্টে আরো আলোচনা করেছি গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া ঠিক না। আমরা আশা করছি যে আপনারা এই বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। যেহেতু গর্ভাবস্থায় একটি সংবেদনশীল সময় তাই একজন গর্ভবতী মেয়েকে কোন কিছু খাওয়ানোর আগে সেই বিষয় সম্পর্কে সম্পন্ন ধারণা নিয়ে খাওয়াবেন।

কারণ আপনার এই ছোট একটি  ভুল একজন গর্ভবতী মেয়ের জন্য অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আমরা গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত এবং গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া ঠিক না এই বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ গবেষণা এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে তথ্যগুলি দিয়েছি তবুও আপনারা সঠিক উপকারিতা লাভের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে থেকে পরামর্শ নিয়ে ফলগুলি খাবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রাজেডি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url