নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - সঠিক নিয়ম জেনে নিন
নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় কি আপনি জানতে চাচ্ছেন ? তাহলে এই পোস্টটি আপনি
মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকেন। কারণ এই পোস্টে আমরা নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে চলেছি।
আপনি যদি আমাদের এই আর্টকেলটি যদি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনিও জানতে
পারেবেন নিমপাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে। এই পোস্টে আমরা আরো জানতে
চলেছি ব্রণ দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার।
পোস্ট সূচিপত্র : আপনি যা যা জানতে চাচ্ছেন
নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় আমরা এখন এই পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত জানব।
আদিমকাল থেকেই ফর্সা হতে নিমপাতার ব্যবহার প্রচুর। নিম পাতা ত্বক ফর্সা করায় একাই
একশো এবং এর কোনো জুড়ি নেয়। নিম পাতার ব্যবহারে শুধু ফর্সায় হওয়ায় যায় না সেই
সাথে ত্বকের বিভিন্ন কালো দাগ এবং কাটার দাগও নির্মুল হয়ে থাকে। তাহলে আসুন আমরা
এখন জানি নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে।
নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বককে
বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়াও নিমপাতায়
রয়েছে অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি, এন্টি ভাইরাস এবং ছত্রাক বিনাশক শক্তি। এসব উপাদান
এবং শক্তি থাকার কারণে আমাদের ত্বক ফর্সা এবং আদ্রতা বজায় থাকে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা
নিমের ফেসপ্যাক দিয়েঃ নিমপাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে নিম
পাতার ফেসপ্যাক তৈরি করে নেওয়া। খালি একমুঠো নিম পাতা পিষে মিহি করে নিন এবং ভালো
ভাবে মুখ ধুয়ে নিয়ে মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট পর সেটি পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই
ভাবে কিছু দিন করার পর দেখবেন আপনার মুখ বা ত্বক ফর্সা হতে শুরু করেছে।
নিম পাতা ও চন্দন কাঠের ফেসপ্যাকঃ প্রাচীন যুগ থেকেই রুপর্চ্চায় বা ফর্সা
হতে চন্দন কাঠের জুড়ি নেয়। নিম পাতা এবং চন্দন কাঠ উভয়ই ফর্সা হতে ব্যাপক কাজ করে
থাকে। এই পর্যায়ে একমুঠো নিম পাতা ও
এক টুকরো চন্দন কাঠ একই সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর ২০ মিনিট মুখে ও
ত্বকে লাগিয়ে রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেওলতে হবে। তাহলেই কিছু দিনের মধ্যে দেখবেন
ত্বক ও মুখ ফর্সা হতে শুরু করেছে।
নিম পাতা ও দইয়ের ব্যবহারে ফর্সাঃ মুখ এবং ত্বক ফর্সা করতে নিম পাতা ও দই
এর ফেসপ্যাকের জুড়ি নেয়। এটি সকল ডাক্তার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দুই টেবিল চামস দই
এবং একমুঠো নিম পাতা মিহি করে একই সাথে মিশিয়ে নিন। এরপর ৩০ মিনিট ত্বকে এবং মুখে
লাগিয়ে রাখুন এবং নির্দিষ্ট সময় পর তা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ভাবে কিছু দিন
ব্যবহার করার পর দেখবেন আপনার মুখ এবং ত্বক ফর্সা হতে শুরু করেছে।
আমরা এতক্ষণ নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় জানলাম। এটি শুধু ত্বক বা মিখ ফর্সা
করে না বরং শরীরের যেকোনো দাগ নির্মূলে সাহায্য করে থাকে। আশা করছি যে নিম পাতা
দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এখন আমরা আলোচনা করব
ব্রণ দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার।
ব্রণ দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার
ব্রণ দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত জানবো।
আমাদের একটি কমন সমস্যা যা সবারই হয়ে থাকে। আমরা ব্রণ একবারে নির্মূল করতে চাই
কিন্তু তা আর হয় না। এটি যেভাবেই হোক না কেন আবার ফিরে আসে অনেক চেষ্টার পরেও
এটিকে নির্মুল করা যায় না। আপনি যদি ব্রণের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আসুন জেনে
নিন কিভাবে এই ব্রণ একবারে নির্মুল করা যায়।
ব্রণের সমস্যা একটি নাছোড়বান্দা এবং এটি দূর করা অনেক কঠিণ হয়ে যায়। আমরা এখন
জানবো নিম পাতা দিয়ে ব্রণ সারানোর উপায়। নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং
অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া যা ব্রণ নির্মূল করতে বেশ কার্যকারী। তাহলে আসুন জেনে নেই
কিভাবে নিমপাতা দিয়ে ব্রণ দূর করা যায়।
নিম পাতা এবং হলুদের মাধ্যমেঃ প্রথমে এক মুঠো নিম পাতাকে মিহি করে নিন এবং
এক টেবিল চামচ হলুদের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর এই মেশানো ফেসপ্যাকটি ২০
মিনিট ধরে মুখে লাগিয়ে রাখুন এবং নির্দিষ্ট সময় পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে
সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার ক্রুন তাহলে দেখবেন আপনার মুখের ব্রণ দূর হতে শুরু
করেছে।
নিম পাতা এবং গোলাপজলের ব্যবহার ঃ এই ধাপে প্রথমেই একমুঠো নিম পাতা
কে মিহি করে নিন এবং সেখানে সামান্য পরিমানে গোলাপজল মেশান। এই দুটো মেশানো হয়ে
গেলে সেখানে কিছু লেবুর রস মিশান। তার পর এই পেস্টটি ৩০ মিনিট ধরে মুখে লাগান
এবং সময় হয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন কিছু দিনের ভিতরে আপনার ব্রণ
দূর হতে শুরু করবে।
নিম পাতা ও লেবুর ব্যবহারঃ লেবু একটি উপকারি ফল যা খাওয়া এবং ত্বকে
ব্যবহার দুটোই করা যায়। এই পর্যায়ে এক চামস লেবুর রস এবং নিম পাতার মিহি একই
সাথে ভালো ভাবে মিশিয়ে নেন। এর পর সুন্দরভাবে সেটি মুখে লাগিয়ে দিন এবং ২০
মিনিট পর সেটি পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ভাবে কিছু দিন করতে থাকুন দেখবেন আপনার
ব্রণ দূর হতে শুরু করেছে।
সেদ্ধ নিম পাতাঃ ব্রণ দূর করার আর একটি সহজ উপায় হলো সেদ্ধ নিম পাতা
ব্যবহার করা। প্রথমে ভালো ভাবে পাতা ধুয়ে নিন এবং সেটিকে সেদ্ধ করে নেন। এর পর
সেই সেদ্ধ পাতা কে মিহি করে করে নিয়ে মুখে মাখুন এবং ১৫ মিনিটের মত রাখুন।
শুকিয়ে গেলে সেটি পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন দেখবেন আপনার ব্রণ দূর হতে শুরু করেছে।
আমরা এইমাত্র আলোচনা করলাম ব্রণ দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার আশা করছি যে আপনি
এই বিষয়ে পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। আসুন আমরা এখন জানি তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার
ব্যবহার।
তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার
আমাদের সকলেই তৈলাক্ত ত্বক নিয়ে বিরক্ত বোধ করে থাকি। এটি কমন সমস্যা যা কম
বেশি সবারি হয়ে থাকে। অনেক চেষ্টার পরেও এই সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় না
বরং যতদিন দিন যায় তত আরো এর বেশি সমস্যা হতে থাকে। তাই আসুন আজকে জেনে নেয়
কিভাবে এই সমস্যা নিম পাতা দিয়ে মুক্ত হওয়া যায়।
সাধারণত আমাদের মুখে তেল উৎপন্ন হওয়ার কারণ হলো যখন আমাদের মুখে সিবাম উৎপন্ন
হয় তখনই এই তৈলাক্ত ভাব বেড়ে যায়। ত্বক স্বাভাবিকভাবেই এটি তৈরি করে থাকে। এই
সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিম এখানে খুব ভালো কাজ করে থাকে। নিম পাতা অনেক ভাবে
ব্যবহার করা যায় এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে।
- নিমে যেহেতু ট্রাইগ্লিসারিন এবং লিমোনয়েড রয়েছে যা তৈলাক্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে তাই আপনি সরাসরি নিম ব্যবহার করতে পারেন।
- নিম বীজের তেল পাওয়া যায় বাজারে সেটি ব্যবহার করলেও এই সমস্যহা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- নিম পাতা এবং ডাবের পানি এক সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে এই সমস্যা থেকে খুব তাড়াতাড়ি মুক্তি পাওয়া যায়। তবে এটি আবার বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়।
- তাছাড়া আপনি যেকোনো আপনার ব্যবকার করা ফেসওয়াশ ব্যবহার করেও এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। শুধু ফেসওয়াস নয় যেকোনো নিমের ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
আমরা এতক্ষণ আলোচনা করলাম তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার। আশা করছি যে আপনি
এই বিষয়ে আপনি পূর্ণ্য ধারনা পেয়েছেন। তাহলে আসুন আমরা এখন জানি এলার্জিতে
নিম পাতার ব্যবহার।
এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার
এলার্জি একটি অনেক বড় সমস্যা এবং কমন সমস্যা যা কম বেশি সবারি হয়ে থাকে। এই
এলার্জি থেকে অনেক বড় বড় সমস্যা হতে পারে যেমন বড় চর্ম রোগ হতে পারে এবং
শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সমস্যার
সমাধান করা উচিত। যদিও এলার্জির সমস্যা কখনই একেবারে নির্মূল করা যায়।
তবে এটাকে বিভিন্ন মাধ্যমে নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। যেমন কিছু খাবার এবং পণ্য
ব্যবহার থেকে বিরত থেকে। তবে শুধু এসব থেকে বিরত থাকলেই হবে না এর কিছু
চিকিৎসাও করা দরকার। তাহলে আসুন এখন জানি কিভাবে নিম পাতা দিয়ে এলার্জি দূর
করা যায়।
আরো পড়ূনঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
নিম পাতার জুস খাওয়ার মাধ্যমেঃ এই জুস তৈরি করতে গেলে একটু পরিশ্রম
করতে হবে। প্রথমে নিম পাতাকে ভালো ভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। ভালোভাবে শুকানো হয়ে
গেলে সেই পাতাগুলোকে মিহি করে বোতলে রেখে দেন। এরপর বাজার থেকে ইসুবগুলের
ভুসি কিনে নিয়ে আসুন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এবং বিকালে ভরা পেটে এই জুস
খান।
এই জুস তৈরি করার জন্য নিমের মিহি এবং ইসুবগুলের ভুসি ভিজিয়ে রাখুন ২০ মিনিট
এবং পরে ছেঁকে নিয়ে খান। এইভাবে এক মাসের মত খান তাহলে দেখবেন এই এলার্জির
সমস্যা কেটে যেতে শুরু করবে।তবে এটি শুধু এলার্জির জন্য নয় এবং এটি পেটের
জন্যেও অনেক উপকারি।
নিম পাতা দিয়ে গোসলের মাধ্যমেঃ নিম পাতার এতটাই উপকারিতা যে আপনি
যেভাবেই নিম পাতা কে ব্যবহার করেন না কেন আপনি নিশ্চিত এর উপকারিতা পাবেন।
আপনার যদি প্রচন্ড এলার্জির সমস্যা থেকে থাকে তাহলে প্রতিদিন ঠান্ডা বা গরম
পানির সাথে নিম পাতা মিশিয়ে গোসল করতে পারেন। এতে আপনার সারা শরীরে নিমের
পানি যাওয়ার কারনে অতি তাড়াতাড়ি এলার্জির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
নিম পাতা মিহির ব্যবহারঃ নিমের পাতায় যেহেতু এন্টি ব্যাক্টেরিয়া এবং
এন্টিওক্সিডেন্ট রয়েছে তাই নিমের পাতার সাথে অন্য কিছু না মেশালেও এর কাজ খুব
ভালো দেয়। শরীরের কোনো জায়গায় ঘা হলে সেখানে লাগিয়ে দিলে তাড়াতাড়ি ঘা ভালো
হয়ে যায় এবং সেখানকার ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে দেয়।
নিম পাতা সকল বয়স এবং সকল মানুষের জন্যই উপকারি। তাহলে আমরা আলোচনা এলার্জিতে
নিমপাতার ব্যবহার। আশা করছি যে আপনি এই বিষয়ের পুরোটা ধারনা পেয়েছেন। এখন
আমরা জানবো নিম পাতা দিয়ে চুলের যত্ন।
নিম পাতা দিয়ে চুলের যত্ন
ত্বক এবং মুখের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি চুলের যত্ন নেওয়াও জরুরি। কারণ আমরা
সকলেই জানি যে আমাদের সৌন্দর্য প্রকাশে চুল কতটা ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই
আমদের চুলের যত্ন নেওয়াতে নজর দেওয়া উচিত। চুল আমাদের সৌন্দর্য প্রকাশের বাহক
হলেও আমরা দেখতে পায় যে আমাদের চুলের নানান সমস্যা দেখা দেয়।
যেমন আমাদের চুল পড়ে যাওয়া, খুসকির মত সমস্যা এবং অল্প বয়সে চুল পেকে যাওয়া
ইত্যাদি। অনেক চেষ্টা বা অনেক কসমেটিক প্রোডাক্টের ব্যবহারেও কোনো কিছু হয়
না। শেষ পর্যন্ত ডাক্তারের কাছে দিয়ে অনেক দামী এবং কষ্টসাধ্য সার্জারি করাতে
হয় তাতেও অনেক সময় কাজ হয় না। সেই কারনেই আজকে আমরা জানব যে কিভাবে নিম পাতার
মাধ্যমে এগুলা সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারি।
নিমের হেয়ারপ্যাকঃ নিমের হেয়ার প্যাক তৈরির জন্য দরকার ৩০ টি নিমের
পাতা, পানি এবং মধু এই তিনটি একই সাথে মিশিয়ে নিয়ে মাথায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট
মেখে রাখুন। নির্দিষ্ট সময় পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এই ভাবে সপ্তাহে দুই
দিন ব্যবহার করুন দেখবেন আপনার চুল পড়া কমে যাবে এবং নতুন করে চুল গজানো শুরু
হবে।
নিমের পাতা এবং দইয়ের ব্যবহারঃ দই আমাদের চুলের জন্য খুবই উপকারি। নিম
পাতার মিহি এবং টক দই মিশিয়ে নিন পরিমানমত। এদের সাথে মেথিও মেশাতে পারেন এবং
এই মিশ্রণটি মাথায় ২৫ থেকে ৩০ মিনিটের মত লাগিয়ে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন। এই ভাবে কিছুদিন ব্যবহার করতে থাকেন তাহলে দেখবেন আপনার খুসকির সমস্যা
বন্ধ হয়ে যাবে।
নিম ও নারিকেল তৈলঃ নিম ও নারিকেল তৈল ভালো ভাবে একটি পাত্র মিশিয়ে
নিন এবং এটি সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করুন দেখবেন আপনার খুসকি কমে যাবে এবং
চুল সাদাও হবে না।
নিম ও অলিভ অয়েলঃ নিম পাতা র মিহি এবং অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন এবং
পাত্রে রেখে দিন। সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করুন তাহলে দেখবেন আপনার চুল পড়া
কমে যাবে এবং চুলের কালার কালো থাকবে।
আমরা এতক্ষণ ধরে চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানলাম। আমাদের
চুলের যত্ন খুবই সচেতন হয়ে নেওয়া উচিত কারন এটি খুবই সিরিয়াস বিষয়। এখন আমরা
জানব নিম পাতার উপকারিতা।
নিম পাতার উপকারিতা
নিম গাছ আমাদের আশে পাশে বাড়ির আনাছে কানাছে দেখা যায়। এই গাছে তেমন কোনো রকম
যত্ন বা পরিচর্যা করার প্রয়োজন পড়ে না। বলা যায় এই গাছটি অবহেলায় বড় হয়।
গাছটি অবহেলায় থাকলেও এটি প্রচুর উপকারি। তাহলে আসুন এর উপকারিতা সম্পর্কে
জেনে নেয়।
- নিম পাতার জুস খাওয়ার ফলে আমাদের পেটের বদহজম এবং পেটের সকল ব্যাকটেরিয়ার সাথে লড়ায় করে।
- নিম পাতার ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বকের যেকোনো দাগ এবং কালো দাগ নির্মূল করতে সহায়তা করে।
- আমাদের সবার প্রতিনিয়ত জ্বর হয়। এমনো সময় হয় যে কোনো ভাবেই সেই জ্বর ভালো করা যায় না অনেক ওষুধ খাওয়া হলেও ভালো হয় না। কিন্তু ওই জায়গায় নিম পাতার রস ভালো কাজ করে। সেই সাথে সর্দি কাশিও ভালো হয়ে থাকে এই নিম পাতার জন্য।
- নিম পাতার ব্যবহারের ফলে আমাদের মুখের ব্রন এবং মেছতা নির্মুল করা যায় সেই সাথে আমাদের মুখ ও ত্বক উজ্জ্বল করতেও ভালো কাজ করে।
- নিম পাতার বিভিন্ন ভাবে ব্যবহারের ফলে এলার্জির বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শুধু এলার্জি নয় চর্ম রোগেরও ভালো কাজ করে এই নিম পাতা।
- নিম পাতার রস নিয়মিত খাওয়ার ফলে আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং চোখের যেকোন রোগ থেকে রক্ষা করে থাকে।
- নিম পাতা ডায়াবেটিস রোগের জন্য অত্যন্ত উপকারি। তাই যাদের ডায়াবেটিস এর সমস্যা আছে তারা প্রতিনিয়ত এই পাতার রস খেতে পারেন।
তাহলে আমরা এখন জানলাম নিম পাতার উপকারিতা। আসলেই এই পাতার অনেক উপকারিতা
যা আমদের প্রতিনিয়ত উপকৃত করে যাচ্ছে। আসুন তাহলে এখন জানি ত্বকের যত্নে
নিম পাতার ব্যবহার।
ত্বকের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
ত্বকের যত্নে নিম পাতার জুড়ি নেয়। ত্বকের যত্নে নিম পাতা অতুলনীয়। এটি ত্বকের
ব্ল্যাক হেডস এবং রোদে পোড়া সহ যেকোনো দাগ নির্মূল করে থাকে। আমাদের ত্বক নমনীয়
তাই যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া সহজেই আক্রমণ করে। নিম পাতা আমাদের ত্বকের
বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের থেকে লড়াই করে।
ইনফেকশন দূর করতেঃ নিম পাতায় যেহেতু এন্টি
ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তাই আমাদের ত্বকের যেকোনো ইনফেকশন
থেকে রক্ষা করে। তোকে ইনফেকশন দূর করতে নিম পাতার অনেক ব্যবহার রয়েছে যেমন
নিমের পাতা দিয়ে প্রতিনিয়ত গোসল করা। ঠান্ডা এবং গরম পানিতে উভয়েই গোসল করা
যায়। তাছাড়া নিমের পাতার রস খেয়েও ইনফেকশন দূর করা যায়।
শুষ্ক ত্বকে নিমের ব্যবহার ঃ নিমের পাতা আমাদের শুষ্ক ত্বককে সতেজ
এবং কোমল করে তোলে। ত্বক সতেজ রাখতে নিম পাতার মিহি এবং অলিভ অয়েল মিশিয়ে
নিন। এ মেশানো পেস্টটি ৩০ মিনিট ধরে মুখে লাগিয়ে রাখুন এবং সময় শেষ
হয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন দেখবেন আপনার ত্বক সতেজ এবং কোমল হয়ে গেছে।
আরো পড়ূনঃ কলমি শাক খাওয়ার উপকারিতা
ত্বকের ব্ল্যাকহেডস এবং কালো দাগ দূর করতেঃ নিমপাতা ত্বকের
ব্ল্যাকহেডস এবং কালো দাগ দূর করতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। তবে ব্ল্যাকহেডস
এবং কালার দাগ দূর করতে নিম পাতার সাথে কমলালেবুর রস এবং লেবু একই সাথে
তিনটি মিশিয়ে নিন। এর সাথে মধু যোগ করতে পারেন। পেস্টটি তৈরি হয়ে গেলে৩০
থেকে ৪০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন এবং স্বচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
দেখবেন আপনার ত্বকের ব্ল্যাকহেডস এবং কালো দাগ দূর হতে থাকবে।
দাঁতের যত্নে নিমঃ নিম শুধু ত্বকের জন্যই ভালো নয় এটি বরং দাতের
জন্যও ভালো। প্রতিনিয়ত নিমের ডাল দিয়ে ব্রাশ করলে দাঁতকে সতেজ এবং মজবুত
করে। তাছাড়া নিমের রস খেলেও দাঁতকে মজবুত এবং সতেজ রাখে সেই সাথে দাতকে
সাদাও রাখে।
এতক্ষণ আমরা ত্বকের যত্নের নিমের ব্যবহার সম্পর্কে জানলাম। ত্বক
আমাদের অনেক মূল্যবান জিনিস তাই এটির যত্ন নিতে আমাদের সচেতন থাকা
উচিত। অনেক কোমল এবং নাজুক টাইপ বের হয়ে থাকে। এখন আমরা নিমের
অপকারিতা সম্পর্কে জানব।
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
নিম পাতা অনেক উপকারী হল এর কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। প্রত্যেক জিনিসেরই
উপকারী থাকলেও তার কিছু উপকারিতা দিক থাকে। নিম পাতারও কিছু অপকারিতা রয়েছে
তবে এটি সরাসরি আমাদের কোন ক্ষতি করে থাকে না। আমরা যদি এর ব্যবহার অনেক
বেশি করে থাকে তাহলে আমাদের ক্ষতি করতে পারে। তাহলে আসুন আমরা এখন জেনে নেই
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে।
কিডনির সমস্যাঃ নিম পাতা অনেক উপকারী হলেও আমাদের এর অতিরিক্ত
ব্যবহারের ফলে আমাদের কিডনির সমস্যা পর্যন্ত হতে পারে। তাই আমরা এর অতিরিক্ত
ব্যবহার থেকে বিরত থাকবে এবং সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করব।
ফুসফুসের সমস্যাঃ নিম পাতা অনেক বেশি উপকারী বলে আমরা নিম পাতার
রস আমরা অনেক বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকি যার ফলে আমাদের ফুসফুসের সমস্যা হতে
পারে। তাই আমাদের উচিত নিমপাতার রস অতিরিক্ত না খাওয়া।
লিভারের সমস্যাঃ নিম পাতার অনেক ব্যবহার এবং অতিরিক্ত নিম পাতার রস
খাওয়ার ফলে আমাদের লিভারের সমস্যা হতে পারে। সেই সাথে আমাদের হজম শক্তিও কমে
যেতে পারে।
ত্বকের সমস্যাঃ আমরা যেই ত্বক উজ্জ্বল বা সতেজ রাখতে নিম পাতার
ব্যবহার করে থাকি কিন্তু আমাদের অতিরিক্ত ব্যবহারে ফলে সেই ত্বকই নষ্ট হয়ে যেতে
পারে।
আমরা এতক্ষন মিমের কিছু ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানলাম এবং কেন এই সমস্যা গুলি হয়
তাও জানো না। সুতরাং আমাদের অতিরিক্ত নিম পাতা ব্যবহার এবং নিমের রস খাওয়া থেকে
এড়িয়ে চলতে হবে। আশা করছি নিমের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আপনার
সম্পূর্ণ বুঝতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্য
আমরা এই পোস্টে আজকে আলোচনা করলাম নিমপাতা দিয়ে দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং
এর ব্যবহারের সঠিক নিয়ম নীতি নিয়ে। আশা করছি যে আপনারা নিম পাতা
দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। এখানে আমরা
আরো আলোচনা করেছি ত্বকের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার এবং ব্রণ দূর করতে নিম
পাতার ব্যবহার।
আমরা এখানে যেমন নিম পাতা উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করেছি তেমন ক্ষতিকর দিক নিয়েও
আলোচনা করেছি। আমরা আরো আলোচনা করেছি কেন ক্ষতিকর দিক হয়। যদিও আমরা
এখানে সবকিছুই আলোচনা করেছি তবুও আপনি যদি ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার করতে চান
তাহলে অভিজ্ঞদের মতামত নিয়ে ব্যবহার করবেন।
ট্রাজেডি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url