ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম আমরা এই পোস্টে জানব। আমরা প্রতিনিয়ত মুখে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে থাকি কিন্তু ব্যবহারের নিয়ম জানি না। এখানে আরও জানবো ব্রণ দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল।
তাহলে আসুন আমরা জেনে নেয় কিভাবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহার করতে হয় এবং এখানে আরও জানি যে তৈলাক্ত ত্বকে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের কাজ।
পোস্ট সূচিপত্রঃ আপনি যা যা জানতে চাচ্ছেন
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
- ব্রণ দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
- ত্বকের তৈলাক্ত দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে নাইটক্রিম তৈরি
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
- চুলের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল উপকারিতা
- চুলে ই ক্যাপ ব্যবহারের নিয়ম
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার উপকারিতা
- ই ক্যাপের ক্ষতিকর দিক
- ভিটামিন ই ক্যাপসুলের কিছু নাম ও দাম
- আমাদের মন্তব্য
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
ভিটামিন ই ক্যাপসুল আমরা মুখে ও চুলে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকি কিন্তু আমরা এর ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানি না। এই ক্যাপসুল অনেক উপকারি কিন্তু এর নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার না করলে উপকারের চেয়ে অপকারি বেশি হবে। যেমন এখানে বলা যেতে পারে ভিটামিন ই এই ক্যাপসুলের ভিতরের শুধু তৈল বের করে মুখে দেওয়া যায় কিন্তু যাদের এলার্জি রয়েছে তাদের এইভাবে ব্যবহারের ফলে সমস্যা হতে পারে।
এলার্জি হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেক সমস্যা হতে পারে যেমন মুখে প্রচন্ড জ্বালাপোড়া করা, প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং প্রচন্ড ব্রণের মতো সমস্যা হতে পারে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দুই ধরনের পাওয়া যায় যেমন,
- সবুজ ভিটামিন ই ক্যাপসুল
- হলুদ ভিটামিন ই ক্যাপসুল
হলদি মাস্ক হিসেবেঃ হলদি মাস্ক এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুলের যেকোনো মাস্ক বানানো খুবই সোজা। হলদি মাস্ক বানানোর জন্য দরকার এক টেবিল চামস মধু, এক চামস দই, এক চামস হলুদ এবং একটি বা দুইটি ক্যাপসুল। এই চারটি জিনিস একই সাথে মিশ্রণ করলেই হয়ে যাবে হলুদ মাস্ক। এই মাস্ক ১০ থেকে ২০ মিনিট রাখার পর সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
গ্রীন টি বা মধু মাস্ক হিসেবেঃ এই মাস্ক বানানোর জন্য প্রথমেই গ্রীন টি কে ভালোভাবে সেঁকে নিতে হবে। এরপর ১ চামস মধু এবং একটি এই ভিটামিন ক্যাপসুল এবং সেঁকে নেওয়া সেই গ্রীন টি এক সাথে ভালো ভাবে মিশ্রণ করলে হয়ে যাবে গ্রীন টি বা মধু মাস্ক। এই মাস্ক ১০ থেকে ২০ মিনিট রাখার পর সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
অ্যালোভেরা মাস্ক হিসেবেঃ এই মাস্ক তৈরি করতে প্রথমে অ্যালোভেরার পাতার ভিতরের পিচ্ছিল অংশ বের করে নিতে হবে এরপর এর সাথে একটি ভিটামিন ক্যাপসুল এর ভিতরের তেল মিশ্রণ করলেই হয়ে যাবে অ্যালোভেরা মাস্ক। এই মাস্ক ১০ থেকে ২০ মিনিট রাখার পর সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
পেঁপে ও গোলাপজল মাস্কঃ এই মাস্ক বানানোর জন্য প্রথমে এক টুকরো পেপে নিয়ে থেতিয়ে নিতে হবে এবং সামান্য পরিমান গোলাপ জল নিয়ে তার সাথে একটি ভিটামিন ক্যাপসুলের তেল মিশ্রণের তৈরি হয় এই পেপে বা গোলাপজল মাস্ক। এই মাস্ক ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখতে হবে মুখে তারপর খালি পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে।
এই ভাবে ব্যবহার না করেও সরাসরি ব্যবহার করা যায় কিন্তু যাদের ত্বক একটু সংবেদনশীল তাদের সমস্যা হতে পারে তাই এই ভাবে মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করায় উত্তম।
ব্রণ দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
আমরা সকলেই চায় ব্রণ এবং দাগ মুক্ত ত্বক কিন্তু তা আর হয়ে উঠে না। আমরা ব্রণ মুক্ত ও সচ্ছ ত্বকের আশায় কতকিছুই না কসমেটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি কিন্তু কোনো কিছুতেই কোনো কাজ হয় না। এছাড়াও আমরা ঘরোয়া অনেক কিছু চেষ্টা করি কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয় না। তাই আজকে আমি আপনাদের জানাবো খুবই কার্যকারি একটি ঘরোয়া টোটকা সম্পর্কে। তাহলে আসুন এখন জানি কিভাবে আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ব্রণ দূর করবেন।
- আপনার যদি এলার্জির মত সমস্যা না থেকে থাকে তাহলে আপনি এই ক্যাপসুলের ভিতরে থাকা থাকা তৈল সরাসরিও ব্যবহার করতে পারেন। রাতে মুখে মেখে ঘুমিয়ে পরের দিন সকালে সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
- উপরে আলোচনা করলাম মাস্ক তৈরিতে আপনি সেভাবেও মাস্ক তৈরি করেও এই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। মাস্ক পরে ১০ থেকে ২০ রেখে দিয়ে সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে তাহলেই ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
- আপনি চাইলে ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। এখন জানি আসলে এটা কিভাবে কাজ করে, আপনি যেই কসমেটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন যেমন নাইটক্রিম বা সফট ক্রিম এগুলো প্রোডাক্টের মধ্যে এই ক্যাপসুলে মূল পদার্থ মিশিয়েও ব্যবহার করা যায়।
- এছাড়া বাজারে অনেক ভিটামিন ই সিরাম পাওয়া যায় যেগুলা মুখের ব্রণ এবং ব্রণের দাগ থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।
ত্বকের তৈলাক্ত দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
- আপনার যদি মুখে প্রচুর পরিমান তৈলাক্ত ভাব থাকে তাহলে আপনি এই ক্যাপসুলের পদার্থ এবং গোলাপের পানি মিশ করে মুখে মাখতে পারেন তাহলে মুখের কিছুটা তৈলাক্তভাব টা কেটে যাবে।
- এছাড়া আগেও বললাম মাস্ক ও সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও ব্যবস্থা করতে পারেন।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে নাইটক্রিম তৈরি
ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
আরও পড়ূনঃ গর্ভাবস্থায় চালতার উপকারিতা এবং অপকারিতা
চুলের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল উপকারিতা
- ই ক্যাপ অথবা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহারের হলে এর চুল পড়া কমায় এবং সেখানে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
- এই ক্যাপসুল ব্যবহারের ফলে চুলের আদ্রতা ঠিক রাখে এবং খুসকি থেকেও মুক্তি দিয়ে থাকে এই ভিটামিন।
- ইক্যাপ চুলের পুষ্টগুন জোগাতে অনিবার্য, শুধু পুষ্টিগুন জোগায় সাথে সাথে চুলের গোড়া মজবুত এবং সবল রাখে যার জন্য চুল মোটা হয়।
- আমাদের চুলের দেখা যায় অনেক সময় চুল লালচে বা হলদে কালারের হয়ে যায় এটি মূলত হয়ে যায় ভিটামিন ই এর অভাবে। তাই যখন এই ইক্যাপ ব্যবহার করা হয় তখন ভিটামিন ই এর অভাব পুরন করে এবং চুলকে সতেজ রাখে।
- চুলের সবার একটি কমন সমস্যা খুসকি হওয়া। এটি মূলত হয় আমাদের উপরের চামড়া মরে গিয়ে উঠে যায়। ভিটামিন ই এর ব্যবহারে আমাদের চুলের নিচের চামড়াকে রাখে সতেজ যার ফলে আর খুসকি দেখা যায় না।
- যাদের চুলের ডগা ফেটে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে তারা এই ভিটামিন ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। কারণ ভিটামিন ই চুলের ডগা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।
- ইক্যাপ নারিকেল তৈলের সাথে মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের কালার হবে কালো এবং অনেক দ্রুত চুল বাড়তি হবে।
চুলে ই ক্যাপ ব্যবহারের নিয়ম
- প্রথমে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে যেখানে উপকরন থাকবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল, দই এবং মধু। এই তিনটি পরিমানমত একসাথে মিশিয়ে মাথায় ৩০ মিনিটের মতো রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এইভাবে সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করলে ভালো সুফল পাবেন।
- এই ধাপে উপকরণ নিতে হবে ই ক্যাপ এবং অ্যালোভেরা জেল। এই দুইটা উপকরণ পরিমান মত একসাথে মিশিয়ে চুলে ৪০ মিনিটের মতো লাগিয়ে রাখতে হবে এবং ৪০ মিনিট পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি সপ্তাহে দুইদিন করলে দেখা যাবে গোড়া মোটা ও সবল হবে।
- ই ক্যাপ এবং নারিকেল তৈল একসাথে মিশিয়ে নরমাল তৈলের মত করে ব্যবহার করতে পারেন। এই ভাবে আপনি সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন।
- আপনি চাইলে আপনি রেগুলার যেই শ্যাম্পু ব্যবহার করেন তার মধ্যেও ব্যবহার করতে পারেন যাকে বলে সাপ্লিমেন্ট। এই বিষয় নিয়ে আমরা উপরে আলোচনা করেছি। সাপ্লিমেন্ট আপনি নরলাম শ্যাম্পুর মত করে ব্যবহার করতে পারেন এতে কোনো ইফেক্ট হবে না।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার উপকারিতা
- ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে আমাদের চুলের হেয়ারফল কমে গিয়ে সেখানে আবার নতুন করে চুল গজায়।
- এই ইক্যাপ খাওয়ার ফলে বয়স আটকে রাখতে সাহায্য করে বা বার্ধক্য আসতে বাধা দেয় এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
- এটি খাওয়ার ফলে আমাদের হাড় গুলোকে শক্ত করে। এটি মূলত ছোট বাচ্চাকে খাওয়ানো উচিত যাতে তাদের শুরু থেকে হাড় শক্ত হবে। তাছাড়া এই ক্যাপসুল খাওয়ার ফলে হাড়ের ক্ষয়ও রোধ করে থাকে।
- ইক্যাপ খাওয়ার ফলে শরীরে ছোপ ছোপ কালো দাগ নির্মূলে সাহায্য করে।
- ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের চর্ম রোগ থেকেও কিছুটা সস্থি পাওয়া যায়।
- ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে কিডনীর সমস্যা থেকে এবং হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
ই ক্যাপের ক্ষতিকর দিক
- অতিরিক্ত ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে পেটে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হতে পারে এবং এপেন্ডিসাইটিস এর মতোও সমস্যা হতে পারে।
- অতিরিক্ত ই ক্যাপ খাওয়া এবং ব্যবহারের শরীরে এলার্জির সমস্যাও হতে পারে।
- এই ক্যাপসুল অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে বমি বমি ভাব,ডায়রিয়া এবং কলেরার মত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
- ই ক্যাপ বেশি ব্যবহারের ফলে মাথা ব্যথা ও ক্লান্তির ভাব দেখা দিতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় এবং দুধ পান করানোর সময় ইক্যাপ না খাওয়ায় উত্তম এবং যদি খেতেই চান তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
- ই ক্যাপ অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়।
ভিটামিন ই ক্যাপসুলের কিছু নাম ও দাম
- E-Cap 200 IU এটি ড্রাগ কোম্পানির ওষুধ। এর প্রতি ইউনিটের দাম ৫ টাকা এবং এক পাতার দাম ৫০ টাকা৷
- E-CAP 400 IU এটিও ড্রাগের ওষুধ যার প্রতি ইউনিটের দাম ৭ টাকা এবং এক পাতার দাম ৭০ টাকা।
- E - Gel 200 এটি রেনাটা কোম্পানির ওষুধ। এটির প্রতি ইউনিট এর দাম ৪ টাকা করে এবং এক পাতার দাম ৪০ টাকা।
- E- GEL DS 400 এটিও রেনাটার ওষুধ এবং প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা এবং এক পাতার দাম ৬০ টাকা।
- E-GOLD 200 এটি র্যাংস কোম্পানির ওষুধ। প্রতি ইউনিটের দাম ৪ টাকা এবং প্রতি পাতার দাম ৪০ টাকা।
- E-GOLD 400 এটিও র্যাংসের ওষুধ এবং প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা এবং প্রতি পাতার দাম ৬০ টাকা।
- VITAMAX-E 200 এটি SKF কোম্পানির ওষুধ। এর প্রতি ইউনিটের দাম ৫ টাকা এবং প্রতি পাতার দাম ৫০ টাকা।
- VITAMAX-400 এটিও SKF এর ওষুধ এবং এর দাম ৭ টাকা পিস এবং প্রতি পাতার দাম ৭০ টাকা।
- OVIT-E 200 এটি অপসোনিনের ওষুধ। প্রতি ইউনিটের দাম ৪ টাকা এবং প্রতি পাতার দাম ৪০ টাকা।
- OVIT-400 এটিও অপসোনিনের ওষুধ এবং এর প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা এবং প্রতি পাতার দাম ৬০ টাকা।
আরো পড়ুনঃ আপনি কেন বান্দরবান ভ্রমণ করবেন
ট্রাজেডি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url