ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম

ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম আমরা এই পোস্টে জানব। আমরা প্রতিনিয়ত মুখে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে থাকি কিন্তু ব্যবহারের নিয়ম জানি না। এখানে আরও জানবো ব্রণ দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল।

ভিটামিন-ই-ক্যাপসুল-মুখে-ব্যবহারের-নিয়ম.webp

তাহলে আসুন আমরা জেনে নেয় কিভাবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহার করতে হয় এবং এখানে আরও জানি যে তৈলাক্ত ত্বকে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের কাজ।

পোস্ট সূচিপত্রঃ আপনি যা যা জানতে চাচ্ছেন

ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম

ভিটামিন ই ক্যাপসুল আমরা মুখে ও চুলে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকি কিন্তু আমরা এর ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানি না। এই ক্যাপসুল অনেক উপকারি কিন্তু এর নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার না করলে উপকারের চেয়ে অপকারি বেশি হবে। যেমন এখানে বলা যেতে পারে ভিটামিন ই এই ক্যাপসুলের ভিতরের শুধু তৈল বের করে মুখে দেওয়া যায় কিন্তু যাদের এলার্জি রয়েছে তাদের এইভাবে ব্যবহারের ফলে সমস্যা হতে পারে।

এলার্জি হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেক সমস্যা হতে পারে যেমন মুখে প্রচন্ড জ্বালাপোড়া করা, প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং প্রচন্ড ব্রণের মতো সমস্যা হতে পারে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল দুই ধরনের পাওয়া যায় যেমন,

  • সবুজ ভিটামিন ই ক্যাপসুল
  • হলুদ ভিটামিন ই ক্যাপসুল
সবুজ ভিটামিন ই ক্যাপসুল একটু নিম্নমানের হয়ে থাকে এবং হলুদ ভিটামিন ই ক্যাপসুল একটু কড়া টাইপের হয়ে থাকে। তবে এই দুই টাইপের ক্যাপসুলি ব্যবহার করা যায়। যাদের একটু বেশি এলার্জির সমস্যা হয়ে থাকে তাদের আমি বলব তারা যেন সবুজ ক্যাপসুল ব্যবহার করে। নিচে সঠিক নিয়মে ব্যবহার সম্পর্কে কিছু বলা হলো।

হলদি মাস্ক হিসেবেঃ হলদি মাস্ক এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুলের যেকোনো মাস্ক বানানো খুবই সোজা। হলদি মাস্ক বানানোর জন্য দরকার এক টেবিল চামস মধু, এক চামস দই, এক চামস হলুদ এবং একটি বা দুইটি ক্যাপসুল। এই চারটি জিনিস একই সাথে মিশ্রণ করলেই হয়ে যাবে হলুদ মাস্ক। এই মাস্ক ১০ থেকে ২০ মিনিট রাখার পর সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

গ্রীন টি বা মধু মাস্ক হিসেবেঃ এই মাস্ক বানানোর জন্য প্রথমেই গ্রীন টি কে ভালোভাবে সেঁকে নিতে হবে। এরপর ১ চামস মধু এবং একটি এই ভিটামিন ক্যাপসুল এবং সেঁকে নেওয়া সেই গ্রীন টি এক সাথে ভালো ভাবে মিশ্রণ করলে হয়ে যাবে গ্রীন টি বা মধু মাস্ক। এই মাস্ক ১০ থেকে ২০ মিনিট রাখার পর সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

অ্যালোভেরা মাস্ক হিসেবেঃ এই মাস্ক তৈরি করতে প্রথমে অ্যালোভেরার পাতার ভিতরের পিচ্ছিল অংশ বের করে নিতে হবে এরপর এর সাথে একটি ভিটামিন ক্যাপসুল এর ভিতরের তেল মিশ্রণ করলেই হয়ে যাবে অ্যালোভেরা মাস্ক। এই মাস্ক ১০ থেকে ২০ মিনিট রাখার পর সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

পেঁপে ও গোলাপজল মাস্কঃ এই মাস্ক বানানোর জন্য প্রথমে এক টুকরো পেপে নিয়ে থেতিয়ে নিতে হবে এবং সামান্য পরিমান গোলাপ জল নিয়ে তার সাথে একটি ভিটামিন ক্যাপসুলের তেল মিশ্রণের তৈরি হয় এই পেপে বা গোলাপজল মাস্ক। এই মাস্ক ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখতে হবে মুখে তারপর খালি পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে।

এই ভাবে ব্যবহার না করেও সরাসরি ব্যবহার করা যায় কিন্তু যাদের ত্বক একটু সংবেদনশীল তাদের সমস্যা হতে পারে তাই এই ভাবে মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করায় উত্তম।

ব্রণ দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল

ব্রণ দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের গুরুত্ব অপরিহার্য। আমাদের সকলেরই কম বেশি এই ব্রণ ও মেছতা হয়ে থাকে। অনেক সময় পুরো মুখে একসাথে অনেক গুলো ব্রণ বের হয়ে থাকে এবং ব্যথাও প্রচন্ড হয়ে থাকে। এটার সরাসরি কোন ওষুধ নেই তবে ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়। এটি শুধু ব্রণ না ব্রণের দাগও নির্মুল করে থাকে।

আমরা সকলেই চায় ব্রণ এবং দাগ মুক্ত ত্বক কিন্তু তা আর হয়ে উঠে না। আমরা ব্রণ মুক্ত ও সচ্ছ ত্বকের আশায় কতকিছুই না কসমেটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি কিন্তু কোনো কিছুতেই কোনো কাজ হয় না। এছাড়াও আমরা ঘরোয়া অনেক কিছু চেষ্টা করি কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয় না। তাই আজকে আমি আপনাদের জানাবো খুবই কার্যকারি একটি ঘরোয়া টোটকা সম্পর্কে। তাহলে আসুন এখন জানি কিভাবে আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ব্রণ দূর করবেন। 

  • আপনার যদি এলার্জির মত সমস্যা না থেকে থাকে তাহলে আপনি এই ক্যাপসুলের ভিতরে থাকা থাকা তৈল সরাসরিও ব্যবহার করতে পারেন। রাতে মুখে মেখে ঘুমিয়ে পরের দিন সকালে সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • উপরে আলোচনা করলাম মাস্ক তৈরিতে আপনি সেভাবেও মাস্ক তৈরি করেও এই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। মাস্ক পরে ১০ থেকে ২০ রেখে দিয়ে সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে তাহলেই ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
  • আপনি চাইলে ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। এখন জানি আসলে এটা কিভাবে কাজ করে, আপনি যেই কসমেটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন যেমন নাইটক্রিম বা সফট ক্রিম এগুলো প্রোডাক্টের মধ্যে এই ক্যাপসুলে মূল পদার্থ মিশিয়েও ব্যবহার করা যায়।
  • এছাড়া বাজারে অনেক ভিটামিন ই সিরাম পাওয়া যায় যেগুলা মুখের ব্রণ এবং ব্রণের দাগ থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।
উপরে যেগুলা বিষয় নিয়ে বলা হলো সেগুলা মেনে চললে আশা করা যায় ব্রণ এবং ব্রণের দাগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এতক্ষণ আমরা জানলাম ব্রণ দূর করতে এই ক্যাপসুলের ব্যবহার এখন জানবো ত্বকের তৈলাক্ত দূর করতে ভিটামিন ই এর ব্যবহার।

ত্বকের তৈলাক্ত দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল 

আমরা অনেকের কাছে প্রশ্ন করে থাকি যে তৈলাক্ত ত্বকে কি এই ভিটামিন ই ক্যাপসুলের তেল ব্যবহার যাবে কি না এবং এই তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির উপায় কি তাহলে আসুন আমরা আজ জানি যে ত্বকের তৈলাক্ত দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং এই তৈলাক্ত ত্বকে ব্যবহার করা যাবে কি না।

আমরা সকলেই চায় যে তৈলাক্ত মুক্ত মুখ কিন্তু যেভাবেই হোক আমাদের মুখ তৈলাক্ত হয়ে যায় তাহলে এখন করণীয় কি, 
  • আপনার যদি মুখে প্রচুর পরিমান তৈলাক্ত ভাব থাকে তাহলে আপনি এই ক্যাপসুলের পদার্থ এবং গোলাপের পানি মিশ করে মুখে মাখতে পারেন তাহলে মুখের কিছুটা তৈলাক্তভাব টা কেটে যাবে।
  • এছাড়া আগেও বললাম মাস্ক ও সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও ব্যবস্থা করতে পারেন।
এতক্ষণ আমরা ত্বকের তৈলাক্ত দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের ব্যবহার জানলাম। এখন জানবো এই ক্যাপসুল দিয়ে নাইটক্রিম তৈরি করা।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে নাইটক্রিম তৈরি

ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে নাইটক্রিম কি আসলেই তৈরি করা যায় এই প্রশ্ন আমাদের মাথায় ঘুরপাক কম বেশি সবারই খায়। আসুন এখন জেনে নেয় যে আসলেই কি এই ক্যাপসুল দিয়ে কি নাইটক্রিম বানানো যায় না যায় না।

হ্যাঁ এটা সত্যি যে ক্যাপসুল দিয়ে নাইটক্রিম বানানো যায়। আসুন এখন জানি কিভাবে তৈরি করতে হয়। আসলে একটু আগে বললাম যে সাপ্লিমেন্ট এই সাপ্লিমেন্ট যা এই নাইটক্রিমও তাই। কিন্তু এখানে দেখে শুনে পরিমান মতো ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়া অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মুখের যেকোনো সমস্যা হতে পারে।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

আমরা কে না চায় যে আমাদের ত্বক ফর্সা এবং লাবণ্যময়ী হোক সে চাওয়াতেই আমরা কত কিছুই না করি কিন্তু তা সবসময় সফল হয় না। আমরা কত কসমেটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি যা আমাদের ত্বকের প্রচুর পরিমান ক্ষতি করে থাকে যা আমরা বুঝতে পারি না। তাই আজকে আমরা জানব ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে সহজেই ইক্যাপ এর মাধ্যমে ফর্সা এবং লাবণ্যময়ী হওয়া যায়।

ভিটামিন-ই-ক্যাপসুল-মুখে-ব্যবহারের-নিয়ম.webp
ই ক্যাপ বা ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার জন্য ফেসপ্যাক তৈরি করতে হবে।

ই ক্যাপ দিয়ে ফর্সা হওয়ার প্রথম ধাপঃ প্রথম ধাপে যা যা উপকরণ লাগবে তা হলো ই ক্যাপ আর অ্যালোভেরা। প্রথমে অ্যালোভেরার ভিতরের অংশের পিচ্ছিল অংশ বের করে নিয়ে ক্যাপসুলের সঙ্গে ভালো ভাবে মিশিয়ে মুখে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মত রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।

উপকারিতাঃ অ্যালোভেরায় রয়েছে প্রচুর পরিমান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা ত্বকের বিভিন্ন রোগের সাথে মোকাবেলা করে থাকে। ই ক্যাপ আর অ্যালোভেরা মিশ্রণের ফলে ত্বক এবং মুখ করবে সচ্ছ এবং দাগমুক্ত। 

ই ক্যাপ দিয়ে ফর্সা হওয়ার দ্বিতীয় ধাপঃ এই ধাপে উপকরণ লাগবে লেবু, দই এবং ইক্যাপ। প্রথমে এক চামস লেবুর রস, এক চামস  দই এবং দুটি ই ক্যাপ মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক বানিয়ে নিতে হবে এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে। এই সময় ধরে রাখা হয়ে গেলে সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

উপকারিতাঃ এই ফেসপ্যাক ব্যবহারের ফলে ত্বকের পুস্টিগুনের যোগান দিবে এবং সেই সাথে ত্বকের কালো দাগ সরিয়ে সেখানে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দেয় এই ফেসপ্যাক।

ই ক্যাপ দিয়ে ফর্সা হওয়ার তৃতীয় ধাপঃ এই ধাপে উপকরণ লাগবে ই ক্যাপ এবং নাইটক্রিম। একটু আগে বলেছি যে কিভাবে এটি বানাতে হবে এবং আরো বলে এটির অপর একটি নাম যেট হলো সাপ্লিমেন্ট। এটি ত্বকে নরমাল নাইটক্রিম লাগানোর সময় লাগিয়ে পরের দিন সকাল বেলা সচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললেই হবে। 

উপকারিতাঃ এই সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের হলে ত্বককে নরম এবং কোমল করে তলে। তাছাড়া কালো দাগ এবং সকল ধরণের দাগ গুলোকে ভিতর থেকে নির্মূল করে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায় ।

ই ক্যাপ দিয়ে ফর্সা হওয়ার চতুর্থ ধাপঃ এই ধাপে প্রয়োজন হবে ই ক্যাপ এবং নারিকেল তৈলের। এই ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য নারিকেল তৈল এবং ইক্যাপ একই সাথে মিশাতে হবে। এর পর এই পেস্ট ১০ থেকে ১৫ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে বসে থাকতে হবে।

উপকারিতাঃ এই পেস্ট নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ত্বকের কালো দাগ এবং ছোপ ছোপ দাগ সরিয়ে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। এছাড়া ব্রণের সমস্যা এবং মেছতার সমস্যা থেকেও মুক্তি দিয়ে থাকে।

ই ক্যাপ দিয়ে ফর্সা হওয়ার পঞ্চম ধাপঃ এখন এই ধাপে দরকার ইক্যাপ, দই এবং ডিম। প্রথমে ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুম আলাদা করতে হবে। এখানে আমাদের দরকার ডিমের সাদা অংশ। এই চামস দই, একটি ই ক্যাপ এবং ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে ১০ মিনিটের মত লাগিয়ে নিতে হবে।

উপকারিতাঃ এই ফেসপ্যাক নিয়ম মতো ব্যবহার করে ত্বকের পুষ্টিগুন বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন ই এর কারনে ত্বকের আদ্রতা ঠিক রাখে এবং ত্বক উজ্জ্বল এবং সতেজ করে।

ই ক্যাপ দিয়ে ফর্সা হওয়ার ষষ্ঠ এবং শেষ উপায়ঃ এখন প্রয়োজন পেপে এবং গোলাপজল।  উপরে এই ফেসপ্যাক তৈরি করার নিয়ম বলেছি। এই ফেসপ্যাক ত্বকে ১৫ মিনিটের মত লাগিয়ে রেখে খালি পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে।

উপকারিতাঃ এই ফেসপ্যাক ব্যবহারের ফলে ত্বক ফর্সা এবং সতেজ থাকে কারন এই প্যাক সকল ধরনের দাগ নির্মুল করে থাকে।

এতক্ষণ জানলাম আমরা যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে কীভাবে ফর্সা হওয়া যায় এখন আমরা জানব যে চুলের জন্য ইক্যাপের উপকারিতা।

আরও পড়ূনঃ গর্ভাবস্থায় চালতার উপকারিতা এবং অপকারিতা

চুলের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল উপকারিতা 

চুলের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুলের গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা সকলেই জানি যে আমাদের সৌন্দর্য প্রকাশে কতটুকু ভূমিকা রাখে। আমরা সকলেই চায় যে আমাদের চুলও ঘন ও সিল্কি হোক কিন্তু কিছু সময় পর দেখা যায় যে আমাদের চুল পড়ে যায় এবং চুল পাতলা হয়ে যায়। 

আমরা এই চুল পড়া ও পাতলা হওয়া থেকে বাচতে কত কিছুই না করে থাকি। কত কসমেটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয় না। চুল গজানোর জন্য মেডিকেল সার্জারিও করে থাকি কিন্তু সেটাতেও অনেক সময় কাজ হয় না। তাই আমি আপনাদের সাথে এখন আলোচনা ঘরোয়া একটি টোটকা নিয়ে যা চুলের জন্য খুবই উপকারি।

এখন আমরা জানব চুলের জন্য ইক্যাপ অথবা ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা,
  • ই ক্যাপ অথবা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহারের হলে এর চুল পড়া কমায় এবং সেখানে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
  • এই ক্যাপসুল ব্যবহারের ফলে চুলের আদ্রতা ঠিক রাখে এবং খুসকি থেকেও মুক্তি দিয়ে থাকে এই ভিটামিন।
  • ইক্যাপ চুলের পুষ্টগুন জোগাতে অনিবার্য, শুধু পুষ্টিগুন জোগায় সাথে সাথে চুলের গোড়া মজবুত এবং সবল রাখে যার জন্য চুল মোটা হয়।
  • আমাদের চুলের দেখা যায় অনেক সময় চুল লালচে বা হলদে কালারের হয়ে যায় এটি মূলত হয়ে যায় ভিটামিন ই এর অভাবে। তাই যখন এই ইক্যাপ ব্যবহার করা হয় তখন ভিটামিন ই এর অভাব পুরন করে এবং চুলকে সতেজ রাখে।
  •  চুলের সবার একটি কমন সমস্যা খুসকি হওয়া। এটি মূলত হয়  আমাদের উপরের চামড়া মরে গিয়ে উঠে যায়। ভিটামিন ই এর ব্যবহারে আমাদের চুলের নিচের চামড়াকে রাখে সতেজ যার ফলে আর খুসকি দেখা যায় না।
  • যাদের চুলের ডগা ফেটে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে তারা এই ভিটামিন ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। কারণ ভিটামিন ই চুলের ডগা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।
  • ইক্যাপ নারিকেল তৈলের সাথে মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের কালার হবে কালো এবং অনেক দ্রুত চুল বাড়তি হবে।
আমরা জানলার ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে চুলের উপকারিতা এখন আমরা জানবো চুলে এই ক্যাপসুল ব্যবহারের নিয়ম।

চুলে ই ক্যাপ ব্যবহারের নিয়ম

চুলে ই ক্যাপ ব্যবহারের নিয়ম জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সকলেই জানি যে ই ক্যাপ চুলের জন্য কতোটা উপকারিতা। এই বিষয় নিয়ে একটু আগে উপরে আলোচনা করলাম। চুল আমাদের সৌন্দর্য প্রকাশের প্রধান মাধ্যম। তাই আমরা যখন চুলে কিছু ব্যবহার করব তা সঠিক নিয়মে ব্যবহার করব। কারণ কোনো কিছু অনিয়মে করলে তার উপকারিতার চেয়ে অপকারিতা বেশি হতে পারে। তাহলে আসুন এখন জানি চুলে ই ক্যাপ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম।

  • প্রথমে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে যেখানে উপকরন থাকবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল, দই এবং মধু। এই তিনটি পরিমানমত একসাথে মিশিয়ে মাথায় ৩০ মিনিটের মতো রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এইভাবে সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করলে ভালো সুফল পাবেন।
  • এই ধাপে উপকরণ নিতে হবে ই ক্যাপ এবং অ্যালোভেরা জেল। এই দুইটা উপকরণ পরিমান মত একসাথে মিশিয়ে চুলে ৪০ মিনিটের মতো লাগিয়ে রাখতে হবে এবং ৪০ মিনিট পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি সপ্তাহে দুইদিন করলে দেখা যাবে গোড়া মোটা ও সবল হবে।
  • ই ক্যাপ এবং নারিকেল তৈল একসাথে মিশিয়ে নরমাল তৈলের মত করে ব্যবহার করতে পারেন। এই ভাবে আপনি সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন।
  • আপনি চাইলে আপনি রেগুলার যেই শ্যাম্পু ব্যবহার করেন তার মধ্যেও ব্যবহার করতে পারেন যাকে বলে সাপ্লিমেন্ট। এই বিষয় নিয়ে আমরা উপরে আলোচনা করেছি। সাপ্লিমেন্ট আপনি নরলাম শ্যাম্পুর মত করে ব্যবহার করতে পারেন এতে কোনো ইফেক্ট হবে না।
আমরা জানলাম ত্বকের এবং চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এখন জানব যে এই ক্যাপসুল খেলে কি কি উপকার ও অপকার হতে পারে।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার উপকারিতা

ভিটামিন ই ক্যাপসুল আমাদের জন্য অনেক উপকারি এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রোডাক্ট। এটি নিয়ম মেনে সকল বয়সের জন্যই খাওয়া যায়। এই ক্যাপসুলের ইফেক্ট নেয় বললেই চলে এই জন্য এটি কোন রকম চিন্তা ছাড়ায় খাওয়া যায়। এখন এই ক্যাপসুল খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
  • ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে আমাদের চুলের হেয়ারফল কমে গিয়ে সেখানে আবার নতুন করে চুল গজায়।
  • এই ইক্যাপ খাওয়ার ফলে বয়স আটকে রাখতে সাহায্য করে বা বার্ধক্য আসতে বাধা দেয় এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
  • এটি খাওয়ার ফলে আমাদের হাড় গুলোকে শক্ত করে। এটি মূলত ছোট বাচ্চাকে খাওয়ানো উচিত যাতে তাদের শুরু থেকে হাড় শক্ত হবে। তাছাড়া এই ক্যাপসুল খাওয়ার ফলে হাড়ের ক্ষয়ও রোধ করে থাকে।
  • ইক্যাপ খাওয়ার ফলে শরীরে ছোপ ছোপ কালো দাগ নির্মূলে সাহায্য করে।
  • ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের চর্ম রোগ থেকেও কিছুটা সস্থি পাওয়া যায়।
  • ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে কিডনীর সমস্যা থেকে এবং হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
এতক্ষণ আমরা জানলাম উপকার সম্পর্কে এখন জানবো ই ক্যাপের কিছু ক্ষতি সম্পর্কে। 

ই ক্যাপের ক্ষতিকর দিক

ই ক্যাপের ক্ষতিকর দিক নেই বললেই চলে আসলে এর তেমন ক্ষতিকর দিক খুজে পাওয়া যায় না। ই ক্যাপসুলের ভিতরে শুধু উপকারিতায় ভরপুর। এখন জানবো ই ক্যাপের কিছু ক্ষতিকর দিক।
ই ক্যাপের ক্ষতিকর দিক
  • অতিরিক্ত ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে পেটে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হতে পারে এবং এপেন্ডিসাইটিস এর মতোও সমস্যা হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ই ক্যাপ খাওয়া এবং ব্যবহারের শরীরে এলার্জির সমস্যাও হতে পারে।
  • এই ক্যাপসুল অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে বমি বমি ভাব,ডায়রিয়া এবং কলেরার মত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
  • ই ক্যাপ বেশি ব্যবহারের ফলে মাথা ব্যথা ও ক্লান্তির ভাব দেখা দিতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় এবং দুধ পান করানোর সময় ইক্যাপ না খাওয়ায় উত্তম এবং যদি খেতেই চান তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
  • ই ক্যাপ অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়।
এতক্ষণ আমরা জানলাম ই ক্যাপ সম্পর্কে অনেক কিছু কথা এখন আমরা কিছু ভিটামিন ই ক্যাপসুলের নাম ও দাম জানবো।

ভিটামিন ই ক্যাপসুলের কিছু নাম ও দাম 

আমরা তো এতক্ষণ জানলাম যে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সম্পর্কে যেমন মুখে ব্যবহারের নিয়ম, উপকারিতা এবং ক্ষতিকর দিক আরও অনেক কিছু এখন জানি ক্যাপসুলের নাম ও দাম সম্পর্কে। 
সবচেয়ে ভালো কয়েকটি ক্যাপসুলের নাম ও দাম বলা হলো।
  • E-Cap 200 IU এটি ড্রাগ কোম্পানির ওষুধ। এর প্রতি ইউনিটের দাম ৫ টাকা এবং এক পাতার দাম ৫০ টাকা৷ 
  • E-CAP 400 IU এটিও ড্রাগের ওষুধ যার প্রতি ইউনিটের দাম ৭ টাকা এবং এক পাতার দাম ৭০ টাকা।
  • E - Gel 200 এটি রেনাটা কোম্পানির ওষুধ। এটির প্রতি ইউনিট এর দাম ৪ টাকা করে এবং এক পাতার দাম ৪০ টাকা।
  • E- GEL DS 400 এটিও রেনাটার ওষুধ এবং প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা এবং এক পাতার দাম ৬০ টাকা।
  • E-GOLD 200 এটি র‍্যাংস কোম্পানির ওষুধ। প্রতি ইউনিটের দাম ৪ টাকা এবং প্রতি পাতার দাম ৪০ টাকা।
  • E-GOLD 400 এটিও র‍্যাংসের ওষুধ এবং প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা এবং প্রতি পাতার দাম ৬০ টাকা।
  •  VITAMAX-E 200 এটি SKF কোম্পানির ওষুধ। এর প্রতি ইউনিটের দাম ৫ টাকা এবং প্রতি পাতার দাম ৫০ টাকা।
  • VITAMAX-400 এটিও SKF এর ওষুধ এবং এর দাম ৭ টাকা পিস এবং প্রতি পাতার দাম ৭০ টাকা।
  • OVIT-E 200 এটি অপসোনিনের ওষুধ। প্রতি ইউনিটের দাম ৪ টাকা এবং প্রতি পাতার দাম ৪০ টাকা।
  • OVIT-400 এটিও অপসোনিনের ওষুধ এবং এর প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা এবং প্রতি পাতার দাম ৬০ টাকা।
বাজারে আরও অনেক ভালো ভালো ক্যাপসুল পাওয়া যায়। তাছাড়া ভিটামিন এ এর ট্যাবলেটও পাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ  আপনি কেন বান্দরবান ভ্রমণ করবেন 

আমাদের মন্তব্য 

ভিটামিন ই ক্যাপসুল আমাদের অনেক উপকারি এবং নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধ। এর উপকারিতার অনেক এবং অনেক কাজে লাগে। আসলে এর উপকারিতা আছে বলে আমরা প্রতিনিয়ত খেতে থাকি এবং ব্যবহার করতে থাকি যেটি আমাদের শরীরের জন্য ঠিক নয়। তাই আমাদের উপদেশ থাকবে যে আপনি যদি এটি নিয়মিত ব্যবহার করতে চান তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন এবং ব্যবহার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রাজেডি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url